বাংলা হান্ট ডেস্ক: ক্রমশ মুদ্রাস্ফীতির প্রকোপে জর্জরিত অবস্থাতেই এবার ফের একটি দুঃসংবাদ সামনে এল। জানা গিয়েছে, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এবার চালের দাম (Price of Rice) আরও বাড়তে পারে। এই প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে যে, খরিফ মরশুমে কম ফলনের পূর্বাভাসের পাশাপাশি নন-বাসমতি চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ১১ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে সামগ্রিকভাবে দামের উর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশ কিছুদিন যাবৎ অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়াও, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে দেশের চাল রপ্তানি সংক্রান্ত নীতিতে সাম্প্রতিক সংশোধনীর প্রসঙ্গে কারণগুলিকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে যে, ভারতের চাল রপ্তানির নিয়মের সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি রপ্তানির জন্য সাপ্লাই হ্রাস না করে বরং তা অভ্যন্তরীণ দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকটাই সহায়তা করেছে।
খাদ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, “অভ্যন্তরীণ চালের দামে ক্রমশ উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে এবং প্রায় ছয় মিলিয়ন টন ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। পাশাপাশি, নন-বাসমতি চালের রপ্তানিতে ১১ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাসের কারণে দাম ফের বাড়তে পারে।” এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতেই, ভাঙ্গা চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এছাড়াও, নন-বাসমতি চালের উপর আরোপ করা হয় ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক।
এমতাবস্থায়, দেশীয় ভাঙ্গা চালের দাম একটা সময়ে খোলা বাজারে প্রতি কেজিতে ১৬ টাকা থাকলেও বর্তমানে তা রাজ্যগুলিতে বেড়ে প্রায় ২২ টাকা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালের খুচরো মূল্য সপ্তাহে ০.২৪ শতাংশ, মাসে ২.৪৬ শতাংশ এবং বাৎসরিক তুলনায় ৮.৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি, পাঁচ বছরের পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫.১৪ শতাংশ।
এদিকে মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় নন-বাসমতি চালের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক দাম প্রতি কেজিতে প্রায় ২৮-২৯ টাকা। যা দেশের দামের পরিপ্রেক্ষিতে বেশি। এমতাবস্থায়, নন-বাসমতি চালের উপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক চালের দাম কমিয়ে দেবে। পাশাপাশি, ভারত থেকে এই রপ্তানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার ফলে এবার প্রতিবেশী দেশ চিনেও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এমনিতে, সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রথমে দাম কমবে বলে আশা করা হলেও সরকারের বর্তমান দেওয়া তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে দাম বাড়ার সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। জানিয়ে রাখি যে, চিনের পর ভারতে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদিত হয়। পাশাপাশি, ভারতের চাল বিশ্ববাজারের ৪০ শতাংশকে অধিগ্রহণ করে রেখেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারত মোট ২১.২ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে। যার মধ্যে ৩৪.৯ লক্ষ টন বাসমতি চাল ছিল। এমতাবস্থায়, ভারতে চলতি খরিফ মরশুমে সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদনের এলাকা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়ে যাওয়ায় দেশীয় বাজারে সরবরাহ বাড়াতে এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এদিকে, মন্ত্রক আরও জানিয়েছে যে, যাঁরা পোল্ট্রির সাথে কিংবা এবং পশুপালনের সাথে যুক্ত তাঁরা ফিড উপাদানের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হতে পারেন। এর কারণ অনুযায়ী বলা হয়েছে যে, পোল্ট্রি ফিডের জন্য প্রায় ৬০-৬৫ শতাংশ ইনপুট খরচ ভাঙা চাল থেকেই আসে।