বাংলা হান্ট ডেস্ক: এমনিতেই সামরিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে ভারত এতদিন যাবৎ অনেকাংশেই বিদেশ-নির্ভর ছিল। কিন্তু, এবার এই প্রবণতা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিদেশে রফতানিতেও বিপুলহারে জোর দেওয়া হচ্ছে এখন। আর তার সুফল ক্রমশ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বোপরি, চিন বা রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ছেড়ে ভারতের তেজস (Tejas) ফাইটার জেট কিনতেই আগ্রহী হচ্ছে একাধিক দেশ। আর সেই তালিকায় এবার নতুনভাবে সংযোজন হল আমেরিকা (America)।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে যে, মালয়েশিয়াকে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ১৮ টি যুদ্ধবিমান বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, গত বছরেই মালয়েশিয়ার বায়ুসেনা মোট ১৮ টি তেজস বিমান ভারতের কাছ থেকে কিনতে চেয়েছিল। আর সেইমতই ভারতে তৈরি এই যুদ্ধ বিমান মালয়েশিয়াকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মালয়েশিয়ার পাশাপাশি ভারতের তৈরি ফাইটার জেট কিনতে চায় অস্ট্রেলিয়া, মিশর, আর্জেন্টিনা, আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিন্স। শুক্রবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এই খবর সামনে এনেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
এদিকে, গত মাসেই জানা গিয়েছিল যে, ভারতের তৈরি হালকা ওজনের তেজস যুদ্ধবিমানের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে মালয়েশিয়া। পাশাপাশি, হ্যালের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর আর মাধবন এক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, সময়ের সাথে সাথে নিজেদের বায়ুসেনাকে আরও উন্নত করার পথে হাঁটছে মালয়েশিয়া। শেষ পর্যন্ত ভারতের এই যুদ্ধবিমানের প্রতিই আস্থা রেখেছে তারা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে তেজস “লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট”-টিকে। ইতিমধ্যেই একাধিক পরীক্ষায় নিজের শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি কর্মদক্ষতায় ভালো ফল করেছে এই যুদ্ধবিমান। অত্যন্ত হালকা ওজনের তেজস যুদ্ধবিমান শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র বয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। বিপক্ষের যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করার পাশাপাশি শত্রুপক্ষের নজরের বাইরে থাকা অবস্থাতেও নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর দিকে আঘাত হানতে পারে তেজস।
এমতাবস্থায়, গত বছরই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (Hindustan Aeronautics Limited)-এর সঙ্গে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যেখানে মোট ৮৩ টি তেজস বিমান তৈরি করার বরাত দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে, ২০২৩ সালের মধ্যেই এই বিমানগুলি তৈরি হয়ে যাবে।