বাংলা হান্ট ডেস্ক: কার ভাগ্য কখন ঘুরে যায় তা কেউই বলতে পারে না। পাশাপাশি, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেও সফলতা লাভ করে গড়ে তোলা যায় দৃষ্টান্ত। আর এবার সেই নজিরই স্থাপন করলেন মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) রেবন শিন্ডে। একটা সময়ে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করলেও সেই চাকরি চলে যায় তাঁর। এমতাবস্থায়, মনের জোরকে সম্বল করে ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ তিনি একটি স্টার্টআপ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। যার মাধ্যমে তিনি চা বিক্রি করা শুরু করেন। আর সেই উদ্যোগই আজ তাঁকে এনে দিয়েছে সফলতা। শুধু তাই নয়, এখন তাঁর ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন পাঁচজন কর্মচারীও। যাঁরা দৈনিক প্রায় ৭০০ কাপ চা তৈরি করেন।
এই প্রসঙ্গে রেবন শিন্ডে জানিয়েছেন, “লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা আসার সময় এবং পুনরায় অফিস খোলার পরে, সাধারণ মানুষের পক্ষে চা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। এমতাবস্থায়, মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা বিনামূল্যে চা-কফি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন আমরা প্রতিদিন ৭০০ কাপ চা বিক্রি করি।”
লকডাউনের সময় পড়েছিলেন সমস্যায়: রেবনের মতে, “প্রায় ছয় বছর আগে, আমি আমার ভাইবোনদের সাথে কাজের সন্ধানে পুণে এসেছিলাম এবং পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড়ের একটি লজিস্টিক কোম্পানিতে ১২,০০০ টাকার মাসিক বেতনে নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে চাকরি পেয়েছিলাম।” যদিও, ওই কোম্পানিটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় এবং রেবন তাঁর চাকরিও হারান। রেবন বলেন, “এরপর আমি একটি স্ন্যাক সেন্টারে কাজ শুরু করি। তারপর আমি একটি জায়গা ভাড়া নিয়ে পিম্পরিতে আমার নিজের স্ন্যাক স্টোর এবং চা কর্নার শুরু করি।”
এদিকে, পরবর্তীকালে মহামারীর তীব্রতা বাড়তে থাকায় লকডাউন জারি করা হয় এবং রেবনের সমস্ত সঞ্চয়ও শেষ হতে শুরু করে। এমতাবস্থায়, কোনোমতে কয়েক মাসের বিরতির নিয়ে জুন মাস নাগাদ, রেবন ফের তাঁর কাজে ফিরে আসেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “তখন শহর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছিল এবং অল্প সংখ্যক মানুষ কাজও শুরু করেছিলেন। তবে, তখনও স্বাস্থ্যজনিত উদ্বেগের কারণে, শিল্প ও ব্যাঙ্কিং খাতের কর্মীরা তাঁদের নিকটতম চা বিক্রেতাদের কাছে যাওয়ার বিষয়ে চিন্তিত ছিলেন।”
Maharashtra: A security guard in Pune turns entrepreneur after losing job in Dec 2019
"After norms relaxed & offices reopened, people found it difficult to get tea. We decided to deliver tea & coffee for free to see the response. Now we sell 700 cups of tea daily," he says pic.twitter.com/ObziDXk1EI
— ANI (@ANI) January 7, 2021
শুরুতে বিনামূল্যে চা দেওয়া হত: এমতাবস্থায়, রেবন চায়ের কাপ এবং থার্মোফ্লাক্স সরাসরি অফিসকর্মীদের কাছে পৌঁছতে শুরু করেন। প্রথমে বিনামূল্যেই এই চা দেওয়া হত। এভাবে ধীরে ধীরে তাঁর চায়ের চাহিদা বাড়তে থাকে। এদিকে দু’মাস যাবৎ বিনামূল্যে চা দেওয়ার মহড়া চালিয়ে যান তিনি। কিছুদিন পর তাঁর গ্রাহকেরা তাঁকে অর্ডারের জন্য ডাকতে শুরু করেন। আদা চায়ের পাশাপাশি কফি এবং গরম দুধেরও ব্যবস্থা রাখতেন তিনি। একটি ছোট কাপের চায়ের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ টাকা এবং বড় কাপের দাম ছিল ১০ টাকা। এভাবে চলার পর মাত্র ছ’মাস পরেই রেবন দৈনিক প্রায় ৭০০ কাপ চা বিক্রি শুরু করেন। শুধু তাই নয়, প্রতি মাসে ২ লক্ষ টাকা আয় করছেন তিনি। যেখানে মোট লাভের পরিমান থাকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।