বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ‘মতেরা কি রাদ’, অর্থাৎ তরমুজের (Watermelon) জন্য যুদ্ধ। শুনতে কিছুটা অদ্ভুত হলেও, ইতিহাসের পাতায় এমন এক মারাত্মক যুদ্ধের উল্লেখ করা আছে। এই যুদ্ধে দুই পক্ষেরই হাজার হাজার সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। তরমুজের গাছের উপর কার অধিকার বেশি, এই ছিল যুদ্ধের বিষয় বস্তু।
যুদ্ধের বিষয় বস্তু
প্রায় ৩৭৫ বছর আগে ১৬৪৪ ঘ্রীস্টাব্দে এই যুদ্ধের কথা শোনা গিয়েছিল। সেই সময়ে বিকেনার রাজ্যের সিলভা গ্রাম এবং নাগৌর (Nagaur) রাজ্যের জখানি গ্রাম একে অপরের সাথে সংলগ্ন ছিল। রাজ্যের শেষ সীমায় থাকা এই দুই রাজ্যের মধ্যে তরমুজ গাছের বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছিল তর্ক যুদ্ধ। বিকেনার নাগরিকরা মনে করত, গাছ যেহেতু তাঁদের দিকেই হয়েছে, সুতরাং ফলও তারাই পাবে। কিন্তু অপরদিকে আবার, নাগৌর রাজ্যের বাসিন্দারা ভেবেছিল, ফল যখন আমাদের দিকে এসেছে, তাহলে ফলের অধিকার শুধু আমাদেরই।
প্রাণ হারাল কয়েক হাজার সেনা
অর্থাৎ একটি ফল তরমুজকে নিয়ে শুরু হল দুই রাজ্যের মধ্যে তুলুম সংঘর্ষ। তর্কাতর্কি থেকে তা নিল যুদ্ধের আকার। শুধুমাত্র তমুজকে নিয়ে বয়ে গেল রক্ত গঙ্গা। প্রাণ হারাল হাজার হাজার সেনা। দু পক্ষই হল মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ।
উপস্থিত ছিলেন না রাজ্যের কোন রাজাই
কথিত আছে, এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সময় দুই রাজ্যের রাজারা কেউই রাজ্যে উপস্থিত ছিলেন না। বিকাশের রাজা করণ সিং একটি অভিযানে গিয়েছিলেন এবং নাগৌরের শাসক রাও অমরসিংহ ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের সেবায় ব্যস্ত। সেই ফাঁকে এই অদ্ভুত এবং হাস্যকর যুদ্ধে বিকাশের সেনাবাহিনীকে রামচন্দ্র মুখিয়া এবং নাগৌর সেনাবাহিনীকে সিংহভি সুখমাল নেতৃত্বে দিয়েছিলেন।
সমস্যা সমাধানের আগেই বেঁধে যায় যুদ্ধ
সেই সময়কালে উভয় রাজ্যের রাজাই ছিলেন পরাধীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত। এই যুদ্ধের খবর পেয়ে তারা তৎক্ষণাৎ মুঘল দরবারে বিষয়টি জানায়। তাঁদের এই সমস্যার সমাধানের জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তারা পৌঁছাবার বহু আগেই এই যদ্ধ শুরু হয়েছিল। এবং ততক্ষণে একটি তরমুজকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষেরই কয়েক হাজার সৈন্যের প্রাণহানি ঘটেছিল।