দেখতে পান না চোখে! সম্বল শুধু ইচ্ছেশক্তি, পরিশ্রম; মাধ্যমিকে বাজিমাত করতে চলেছেন এই তিন পড়ুয়া

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পরিশ্রম ও ইচ্ছা শক্তি মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে তার কাঙ্খিত সাফল্যের দরজায়। এই কথাটাই আবার প্রমাণ করতে চলেছেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার মুস্তাসিন ওয়াসিম, খয়রাশোল ব্লকের পাঁচড়ার আইয়ুব মিঞা এবং রাজনগর ব্লকের ভবানীপুরের বাবলু মাহারা। জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তি নেই এদের।

তবুও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি। শূন্য থেকে শুরু করে আজ এই তিনজন বসতে চলেছেন মাধ্যমিক পরীক্ষায়। মাধ্যমিককে বলা হয় জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। তাই পরীক্ষা নিয়ে চিন্তা ও টেনশন দুটোই রয়েছে এদের। তবে তার সাথেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলের আশায় এখন পড়াশোনার সাগরে ডুব দিয়েছেন এরা।

আরোও পড়ুন : অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ! ছাত্রের পর এবার মৃত্যু ছাত্রীর, ফের কাঠগড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষকরাও যথেষ্ট সাহায্য করছেন বিশেষভাবে সক্ষম এই মাধ্যমিক পড়ুয়াদের। এই তিন পড়ুয়াকে সব ধরনের পড়াশোনার বিষয়বস্তু ও আলোচনা রেকর্ড করে দেওয়া হয়। রেকর্ড শুনে ও ব্রেল পাঠ্য বইয়ের সাহায্যে পড়াশোনা করে চলেছেন মুস্তাসিন, আইয়ুব, বাবলু মাহারারা। বিগত বছরগুলিতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বেশ ভালো ফল করেছেন সিউড়ির ‘শ্রীঅরবিন্দ ইনস্টিটিউট ফর সাইটলেস’-এর পড়ুয়ারা।

আরোও পড়ুন : বাজার কাঁপাতে আসছে Maruti’র এই নতুন গাড়ি! চমৎকার ফিচার্স, দুর্দান্ত মাইলেজের সামনে পাত্তা পাবে না কেউই

এই তিন পরীক্ষার্থী স্কুলের সেই সাফল্যকে বজায় রেখে আরো ভালো ফলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের জন্য ১৯৯০ সালে সিউড়ির ডাঙ্গালপাড়ায় চালু হয় ‘শ্রীঅরবিন্দ ইনস্টিটিউট ফর সাইটলেস’। জেলার বাইরের পড়ুয়ারাও এই স্কুলে পড়াশোনা করতে আসেন। স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়।

তারপর এখানকার পড়ুয়ারা সিউড়ি শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে ভর্তি হন নবম ও দশম শ্রেণীর জন্য। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ দাস বলেছেন,  “স্কুলের শিক্ষকের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়, পাঠ্যবইয়ের সংখ্যাও কম। তবে তারই মধ্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। গত কয়েক বছর আমাদের স্কুল থেকে মাধ্যমিকে বেশ ভাল ফলাফল হয়েছে। এ বারও সেই ধারা বজায় রাখতে সচেষ্ট তারা।”

1706583070 হার না

পরীক্ষার্থী বাবলুর কথায়,  “আমরা তিন জনে এক সঙ্গেই হস্টেলে এবং ক্লাসরুমে বসে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বই ও রেকর্ডিং ছাড়াও যখনই প্রয়োজন হয় আমরা শিক্ষকদের সহযোগিতা পাই। দশম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি, আমরা স্কুলের নাম রাখতে পারব।” এখন, পরীক্ষা কেমন হয় সেটাই দেখার বিষয়।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর