বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: একজন সফল ক্রিকেটার শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমের কারণেই গড়ে ওঠেন না। অনেক সময় তার প্রয়োজন পড়ে ভাগ্যের সাহায্যে। ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন ক্রীড়াবিদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে ক্রিকেটের জগতে দেখা গেছে অনেক সময় অনেক শুভানুধ্যায়ীর পরামর্শ শুনে কোনও ক্রিকেটার নিজের খেলায় সামান্য বদলে রয়েছেন এবং তারপর ক্রিকেটের জগতে ইতিহাস তৈরি করেছেন।
গোটা বিশ্বজুড়ে ইতিহাস ঘাঁটলে এমন বেশ কিছু ক্রিকেটারের নাম উঠে আসবে যারা ক্রিকেটের ইতিহাসে অমর হয়েছেন সেই রূপে, যে রূপে তারা ক্রিকেট খেলাটা শুরু করেননি। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব এমন ৩ জন ক্রিকেটার সম্পর্কে যারা নিজেদের ব্যাটিং অর্ডারে বদল করার কারণে ক্রিকেট ইতিহাসের সঙ্গে নিজেদের নাম পাকাপাকিভাবে জুড়ে ফেলেছেন।
সনৎ জয়সূর্য (শ্রীলঙ্কা): ১৯৮৯ সালে যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই তারকার অভিষেক ঘটেছিল তখন তিনি ছিলেন একজন বোলার অলরাউন্ডার। কিন্তু তার আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে ম্যানেজমেন্ট তাকে একজন ওপেনার হিসেবে খেলানোর পরিকল্পনা করেন করেন এবং ১৯৯৬ বিশ্বকাপে জয়সূর্য ওডিআই তে ওপেনিংয়ের ধারণাই বদলে দেন। ওই বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ১৩১.৫৪ স্ট্রাইক রেটে ২২১ রান করেছিলেন যা সেই সময় অকল্পনীয় ছিল। ওই বিশ্বকাপটিও জিতেছিল দ্বীপরাষ্ট্র। পরবর্তীতে তিনি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার এবং অলরাউন্ডার হিসাবে পরিচিত হন।
স্টিভ স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া): ২০১০ সালে যখন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নিজের অভিষেক ঘটিয়েছিলেন তখন তিনি ছিলেন একজন লেগস্পিনার। কিন্তু সেই ভূমিকায় একেবারেই সফল না হওয়ায় দল থেকে বাদও পড়তে দেরি হয়নি। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে দিনের পর দিন ভালো ব্যাটিং করে, আইপিএলে একজন ব্যাটার হিসাবে সাফল্য পেয়ে পরিস্থিতি বদলে যায়। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরের তৃতীয় টেস্ট ম্যাচে তিনি অভিষেকেই বিরানব্বই রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন যেখানে বাকি ক্রিকেটাররা ব্যাট হাতে চূড়ান্ত স্ট্রাগল করছিলেন। শুধু টেস্ট ফরম্যাটেই নয়, ২০১৫ সালের ওডিআই বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন তিনি। সেখান থেকে আজ এই প্রজন্মের সেরা টেস্ট ব্যাটার হয়ে উঠেছেন প্রাক্তন অজি অধিনায়ক।
রোহিত শর্মা (ভারত): কেরিয়ার শুরু করেছিলেন একজন মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে এবং সেই জায়গায় সাফল্যও পেয়েছিলেন। কিন্তু গোটা ২০১২ বছরটা জুড়ে টানা অফফর্মে থাকায় তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবি উঠেছিল। কিন্তু অধিনায়ক ধোনি বরাবরই রোহিতের প্রতিভা সম্পর্কে আশাবাদী ছিলেন। ২০১৩ সালে তাই তিনি রোহিতকে একজন ওপেনার হিসেবে খেলানোর চেষ্টা করেন এবং প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেন রোহিত। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তার এবং শিখর ধাওয়ানের ওপেনিং জুটির দাপটেই ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ধোনির ভারত। ওপেন করে ওডিআই ফরম্যাটে তিনটি দ্বিশতরান করার মত অসম্ভব কীর্তিকে সম্ভব করেছেন তিনি। বিশ্বের সর্বকালের সেরা ওডিআই ক্রিকেটারদের মধ্যে তার নাম প্রথমের সারিতেই থাকবে।