ইস্তফার পরই থানায় তলব তৃণমূলের প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে! কারণ ঘিরে ধন্দ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অভিষেক ব্যানার্জীর (Abhishek Banerjee) কড়া নির্দেশেই হল চটজলদি কাজ? ৪৮ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ৪৮ নয়! ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন মারিশদা (Marishda) ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্র।

শনিবার কাঁথির ভরা সভামঞ্চ থেকে এই তিন জনেরই নাম উল্লেখ করেছিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই তিন জনকেই পদত্যাগ করতে হবে। এরপর রবিবার তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ মাইতির সঙ্গে ওই তিন জনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পরই তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন।

মূলত ঘটনার সূত্রপাত হয় শনিবার। কাঁথিতে সভা করতে যাওয়ার পথে মারিশদা পঞ্চায়েত এলাকার খোঁজখবর নিতে একটি গ্রামে ঢুকে পড়েন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন যে তারা বহু সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সাথেই নিজেদের অভিযোগ প্রমান করতে নানা নথিপত্রও তারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখান। এরপরই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। রওনা দেন কাঁথির সভার উদ্দেশ্যে ।

কাঁথি সভায় বক্তব্য রাখতে উঠেই তিনি দলের পঞ্চায়েত নেতাদের কাজের সমালোচনা করেন। বলেন, ‘মানুষকে পরিষেবা দেব না। আর নিজেরা প্রার্থী হব। পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থাকব, এমনটা যদি ভেবে থাকেন, তবে ভুল করছেন। কলকাতায় থাকি বলে কিছু জানি না ভাববেন না। সব খোঁজ রাখি।’ এরপরই কার্যত ওই তিন মাথাকে ইস্তফার নির্দেশ দেন দলনেতা।

অন্যদিকে, ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রবিবার বিকেলে মারিশদা থানায় ডেকে পাঠানো হয় সদ্য প্রাক্তন প্রধান ও উপপ্রধান ঝুনুরানি, রামকৃষ্ণ এবং তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক কার্যকরী সভাপতি মানিক দোলুইকে। থানায় আসেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-ও। তবে এবিষয়ে পরে অবশ্য রামকৃষ্ণ জানান, ‘‘থানায় এমনিই ডেকেছিল।’’

সূত্রের খবর, অভিষেকের নির্দেশ মেনে প্রথমে ইস্তফা দিতে চাননি ঝুনুরানি। তার বক্তব্য ছিল, “আমি জনগণের ভোটে প্রধান হয়েছি। আমাকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্তফা দিতে বলতে পারেন না। ” পরে অবশ্য তিনিও ইস্তফা দেন। এ দিন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি পদে ইস্তফা দিয়ে গৌতম মিশ্র বলেন, ‘‘একুশের বিধানসভা ভোটের আগে দুর্দিনে আমাকে অঞ্চল সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। হয়তো আমি আমার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে পারিনি বলে দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেছেন। তাঁর নির্দেশ পালন করেছি।’’ আর উপপ্রধান পদে ইস্তফা দিয়ে রামকৃষ্ণের মন্তব্য, ‘‘দলকে ভালবাসতে গেলে অনেক কিছুই করতে হয়।’’

kanthi sabha

অভিষেক চাপের মুখে পড়েই ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন এই তিন মাথা! বিভিন্ন মহলে উঠেছে প্রশ্ন।
তবে তিন নেতার একজোটে ইস্তফায় শোরগোল পরে গেছে গোটা এলাকায়। অনেকেই বাহবা দিলেন দলনেতার এই নির্দেশকে আবার অনেকেই সরব হচ্ছেন বিরোধীতায়। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এভাবে কারোর নির্দেশে ইস্তফা কি কাম্য? এই প্রশ্নও উঠে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর