বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Vote)! একদিকে যেমন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সকল রাজনৈতিক দল। তেমনি তোড়জোড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে দল বদল। এবার সেই একই কাণ্ড ঘটালেন দিদির বহু বছরের বিশ্বস্ত সৈনিক। ২৫ বছর ধরে তৃণমূলে রয়েছেন। দিদির দূত কর্মসূচিতে গিয়ে তার বাড়িতেই দুপুরের ভোজন সেরেছিলেন বিধায়ক জুন মালিয়া (TMC MLA June Malia)। আর শালবনির সেই নেতাই পেলেন না পঞ্চায়েতের টিকিট।
তারপর আর কী! রাগে-ক্ষোভে শাসকদলের সেই দাপুটে নেতা, সুকুমার ওরফে চণ্ডী ঘোষ যোগ দিলেন সিপিএম এ। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে সিপিএমের (CPM) প্রার্থী হয়েছেন তিনি। কাস্তে হাতুড়ি চিহ্নে লড়বেন মেদিনীপুর সদরের কর্ণগড় ১০ নম্বর অঞ্চলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য চণ্ডী ঘোষ।
বেইমানি করেছে দল। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার পাইটা ২ নং মেদিনীপুর সদরের কর্ণগড় ১০ নম্বর অঞ্চলের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমারবাবু। তার দাবি, বেইমানি করে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। তাই বাধ্য হয়ে সিপিএমের হয়ে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
যদিও সুকুমারের দাবি মানতে নারাজ মেদিনীপুরের তারকা তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া। নেত্রীর দাবি, পুরনোদের মধ্যে যাদের ভাবমূর্তি ভাল নয়, তাদের সরিয়ে এবারের নির্বাচনে নতুনদের আনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পূর্ব বর্ধমানের (Bardhaman) রায়নার দু’টি পঞ্চায়েতের দু’টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচনের আগেই জয়লাভ করেছে সিপিএম। সূত্রের খবর, রায়নার পাইটা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি শাসকদল। অন্যদিকে শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি সিটে তৃণমূল প্রার্থী দিলেও শেষ মুহূর্তে সেই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়।
জানা গিয়েছে, রায়না ১ ব্লকের শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৮ নম্বর বুথটি অনগ্রসর জাতিদের জন্য সংরক্ষিত। শাসকদলের হয়ে সেখানে প্রার্থী হিসেবে টিকিট পান চাঁদ মহম্মদ মল্লিক। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তিনি নিজের জাতিগত শংসাপত্র জমা দিতে না পারায় শনিবারই তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
ওই আসনে তৃণমূল ছাড়া একমাত্র প্রার্থী ছিল সিপিএমের ইসমাইল মোল্লা। তৃণমূলের প্রার্থী বাতিল হওয়ায় তিনিই জয়ী হয়ে যান। জানা গিয়েছে, এই দু’টি আসনে সিপিএম ছাড়া আর আর কোনও রাজনৈতিক দলই প্রার্থী দিতে পারেনি। তাই স্বাভাবিকভাবে দুই আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় হয়েছে সিপিএম এর।
বর্ধমানের মতো জেলায় তৃণমূলের এহেন দশা দেখে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক চৰ্চা। চিন্তায় ঘাম ঝরছে শাসকদলের। অন্যদিকে, এরই মধ্যে দাপুটে নেতা সুকুমার ওরফে চণ্ডী ঘোষের তৃণমূল ছেড়ে বামে যোগ দেওয়ায় যে লাল পাল্লা আরও কিছুটা ভারী হল তাতে সন্দেহ নেই।