যুবতীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে দিনেদুপুরে ধর্ষণ, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) মহিলারা সুরক্ষিত নন। এমন অভিযোগ বারে বারেই করেছে বিরোধীরা। সেই অভিযোগকেই এবার সত্য প্রমাণ করে এক যুবতীকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার (TMC Leader) বিরুদ্ধে। চাকরি দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে ওই তৃণমূল নেতা এলাকার এক যুবতীকে ধর্ষণ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার (South 24 Paraganas) পানিহাটি (Panihati) এলাকায়। জানা যাচ্ছে, খড়দহ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন যুবতী। অভিযুক্ত ব্যক্তি তৃণমূল নেতা বলেই এলাকায় পরিচিত। সেই নেতার অবশ্য দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

জানা যাচ্ছে, পানিহাটির জয়প্রকাশ কলোনী এলাকার ঘটনা এটি। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ওই এলাকার একটি ক্লাবের সেক্রেটারি বলেও খবর। যুবতীর অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় তাঁকে ধর্ষণ করেছে ওই তৃণমূল নেতা। শুধু তাই নয়, ঘটনার সময় তাঁকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেয় অভিযুক্ত। নির্যাতনে মানসিক ভাবে বিধস্ত যুবতীর খড়দহ বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনার পর এক মানবাধিকার কর্মীর সাহায্য নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

কী ঘটে সেই দিন? মানবাধিকার কর্মী রীণা দাস গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩ টে ৪৩ মিনিটে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ফোন করে যুবতীকে। তাঁকে ফোনে বলা হয়, ‘তোর একটা চাকরির খবর আছে। এখুনি চলে আয়।’ যুবতীর দাবি, ওই ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখেন, অভিযুক্ত মদ্যপান করতে ব্যস্ত। এরপর হঠাৎই ঘর বন্ধ করে যুবতীকে হেনস্থার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। বিপদ বুঝতে পেরে চিৎকার করতে শুরু করেন যুবতী। তখন তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অভিযুক্ত। এরপর ঘটে ধর্ষণের ঘটনা। ঘর থেকে নির্যাতিতা যুবতী বের হয়ে এক প্রতিবেশীর সাহায্য নিয়ে মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপরই রীণা দাস গঙ্গোপাধ্যায় নিজে থানায় নিয়ে যান যুবতীকে।

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছুই বলতে চাননি। তবে তিনি দাবি করেন এই ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যে। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার খোঁজ করছে খড়দহ থানার পুলিশ। তৃণমূলের কাউন্সিলর জয়ন্ত দাসকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, এই অভিযোগ সত্যি নয়। ফাঁসানো হচ্ছে ওই তৃণমূল নেতাকে। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা জয় সাহা বলেন, ‘তৃণমূল নেতারা টাকার অহঙ্কারে মানুষের মাথার ওপরে উঠে নাচছে। নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার কোনও অধিকার নেই।’

ধর্ষণে বাংলার স্থান কোথায়? সামগ্রিক নারী নির্যাতনের বিচারে শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে মোট ৪৯ হাজার ৩৮৫টি ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গত এক বছরে বাংলায় মোট ৩৬ হাজার ৪৩৯টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি একটি রিপোর্ট বলছে, ধর্ষণের মামলায় সাজা দেওয়ায় তৎকালীন দেশের ২৯টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ২৮তম। শুধু ধর্ষণ মামলাতেই নয়, সার্বিক ভাবে সব ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রেই সাজা দেওয়ার ব্যাপারে বাকি রাজ্যগুলির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর