রাজীব মুখার্জী, হাওড়াঃ যাদের তাৎক্ষণিক তালাক দেওয়া হচ্ছে তাদের কাছে উনি যান, তাদের পাশে দাঁড়াক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। উনি সেটা করেন নি। বরং এটা উনি করলে মুসলিম মহিলাদের কোর্টের দরজায় কড়া নাড়তে হত না। কিন্তু আদালতের দরজায় তাদের গিয়ে দাঁড়াতে হয় নিজেদের বিপদের জন্য।
তাদের পাশে দাঁড়ায় না কেউ। প্রসঙ্গত আজ শিলিগুড়িতে তিন তালাক নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সাংবাদিক সম্মেলন প্রসঙ্গে এই কথাই বলেন তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিলকারীদের মধ্যে অন্যতম আবেদনকারী ইশরাত জাহান।
তিনি বলেন, যখন আমার সাথে তাৎক্ষণিক তালাকের ঘটনা ঘটেছিল আমি বিচার পাওয়ার আশায় মুখ্যমন্ত্রী মমতাদিদিকে একাধিক চিঠি লিখেছিলাম কিন্তু উনি মহিলা হয়েও নীরব থেকেছেন বরাবর একজন মহিলার দুঃখ দেখেও। আমি কখনোই বলছি না তালাক হবে না। আমি তাৎক্ষণিক তালাকের বিরোধী। স্বামী স্ত্রী সামনাসামনি বসে তালাক নিয়ে যৌথ সিদ্ধান্ত নিক। দুপক্ষেরই সমান অধিকার আছে তালাক দেওয়ার। আমার কাছে এমন বহু কেস এসেছে যেখানে আমি নিজে তালাক নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মীমাংসা করতে চেয়েছি। কিন্তু প্রত্যেকবারই স্বামী পক্ষ রাজি হয়নি। ফলে মহিলাদের বিপদের মুখে পড়তে হয়। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর উচিত কেউ অকারণে তাৎক্ষণিক তালাক দিলে সবার আগে সেই মহিলার পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। তাকে বিচার পাইয়ে দেওয়া তার কর্তব্য। আমি যখন এই কেস লড়া শুরু করি তখন উনি পাশে দাঁড়ালে আজ এই আইনের প্রয়োজন হত না।
কেন আসেননি তিনি! কিসের ভয় রয়েছে তার মনে? আমাদের সমাজের পুরুষদেরকে ভয় পান তিনি? আসলে যেহেতু মুসলিম ছেলেরা তাৎখনিক তালাক দিলে এবার ৩ বছরের সাজা হবে। তাই তিনি মানছেন না।
তাৎক্ষণিক তিন তালাক ছাড়াও কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার সাংসদ আরশাদ ওয়েসীর মন্তব্য নিয়েও সমালোচনা করেন ইশরাত। তিনি বলেন, বিয়ে যদি কন্ট্রাক্ট হয় তবে সেটা কতদিনের? মাত্র ১০% লোক তালাক দেয়। তাহলে এই মুষ্টিমেয় সংখ্যার কাছেই কি বিয়ে একটা কন্ট্রাক্ট। বাকিদের কাছে নয়? নিকাহর সময় তো এনিয়ে কিছু লেখা হয়না।
প্রসঙ্গত সাম্প্রতিক অতীতে এই কংগ্রেস নেতা বলেছিলেন যে মুসলিম সমাজে বিবাহ একটা কন্ট্রাক্ট। তার সেই বক্তব্য কে নস্যাৎ করে এভাবেই বলেন তাৎক্ষণিক তিন তালাক রোধের আবেদনকারী ইশরাত জাহান।