বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহুদিনের প্রতীক্ষা। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে শেষ হল রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি (Dearness Allowance)। এদিন বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বিশেষ বেঞ্চে ডিএ মামলার শুনানি হয়। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ। কারও কোনও বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে জমা দেওয়ার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আদালত সূত্রে খবর, দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে লিখিত আকারে তাঁদের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টে জানাতে হবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীরা রাজ্যের জবাবের প্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য জানাবেন। তার তিন সপ্তাহ পর লিখিত জবাব দেখবে আদালত। তারপর ডিএ মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা। মনে করা হচ্ছে অক্টোবরের শুরুতেই রায়দান করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।
ডিএ মামলার শুনানি সমাপ্ত হল | Dearness Allowance
২০২২ সালের ২০ মে ডিএ মামলা হাইকোর্টে উঠলে আদালতের নির্দেশ ছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তবে সেবার জয় পেয়েও মেলেনি বকেয়া। উচ্চ আদালতের ডিএ রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়।
এরই মাঝে তিনটি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার দায়ের করে। সেই মামলার মধ্যেই পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সেই ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা চলছে। বর্তমানে ২০২৪ সাল। হাইকোর্টে ডিএ মামলাকারীরা জয় পেয়েছিল।
আরও পড়ুন: ‘কেউই রাজ্যকে বাধ্য করতে পারে না..’, আজই DA মামলার চূড়ান্ত শুনানি! সামনে বিরাট আপডেট
গত ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। এরপরই রাজ্য সরকার স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করে। সেই প্রেক্ষিতেই মামলা শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে ২৫ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও রাজ্য তা না মিটিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের কাছে সময় চায়। আদালতের কাছে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত ৪ অগস্ট থেকে ৭ অগস্ট প্রতি দিনই টানা শুনানি চলেছে সুপ্রিম কোর্টে। তারপর দুদিন অবশ্য শুনানি পিছিয়ে যায়। এদিন ডিএ মামলার শুনানি শেষ হল।
আর্থিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আবেদন ছিল, আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন। পাশাপাশি জানানো হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত কোনও বরাদ্দ ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য।
আরও পড়ুন: বাংলার মাটিতে বাঙালির হেনস্তা! বাংলায় কথা বলায় চাকরি ছাঁটাইয়ের অভিযোগ শিলিগুড়িতে
ডিএ মামলায় প্রথম থেকেই রাজ্যের যুক্তি ছিল, ডিএ বাধ্যতামূলক নয়। এটা সরকারি কর্মীদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এদিকে পাল্টা মামলাকারী যুক্তি ছিল, নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দেওয়া সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে। বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হোক। প্রয়োজনে বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়ার প্রস্তাব দেন তারা। এবার ডিএ মামলায় শীর্ষ আদালত কি রায় দেয় সেদিকে নজর রয়েছে সকলের।