বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত কয়েক বছর ধরে বাংলা সিনেমা কার্যত কোণঠাসা রাজ্যের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে। যখনই কোনও বড় হিন্দি ছবি মুক্তি পায়, তখন নাকি বাংলা ছবির শো কমিয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় বাংলার ছবি এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রেক্ষাগৃহ থেকে তুলে নেওয়া হয়। না পৌঁছাতে পারে দর্শকের কাছে, না ফেরে লগ্নিকারীদের অর্থ। এই দমন নীতির বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন টলিউড (Tollywood) তারকারা।
চলতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে একগুচ্ছ বিশিষ্ট টলিউড ব্যক্তিত্ব চিঠি লেখেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট, ‘এটা কোনও ইন্ডাস্ট্রির ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়, এটা বাংলা ভাষা ও গৌরবের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন।’
জরুরি বৈঠকে একজোটে টলিউড (Tollywood)
৭ অগাস্ট, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি জরুরি বৈঠকে মিলিত হন টলিউডের (Tollywood) একঝাঁক তারকা ও নির্মাতা। অভিনেতা তথা সাংসদ দেব বলেন, “ধূমকেতু শুধুই ছবি নয়, এটা আমাদের ভবিষ্যতের প্রতীক।” পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় জানান, “নিজের রাজ্যে যদি বাংলা ছবি অপমানিত হয়, তবে সেই ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ অন্ধকার।”
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানান, তাঁর একাধিক ছবি মাঝপথে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার অন্তত প্রশাসন পদক্ষেপ করায় আশার আলো দেখছেন তিনি। অরূপ বিশ্বাস আশ্বাস দিয়েছেন, “এবার থেকে বাংলা ছবিও প্রাইম টাইমে চলবে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। আর কোনও হল বাংলা ছবি দেখাতে অস্বীকার করতে পারবে না।”
একদিকে ‘ওয়ার টু’, অন্যদিকে ‘ধূমকেতু’, কীভাবে ফিরবে বাংলা ছবি?
এই মুহূর্তে বাংলার সিনেমার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেট ছবি ‘ওয়ার টু’ যেখানে একাধিক শো নিয়ে থিয়েটার দখল করে রাখে, সেখানে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সম্মান রক্ষায় মুক্তি পাচ্ছে ‘ধূমকেতু’। তাই শুধু টিকিট বিক্রি নয়, এখন লড়াই মন জয় করার। লড়াই ভাষার, ইতিহাসের, আত্মপরিচয়ের।
আরও পড়ুনঃ ‘তারিখ পে তারিখ’, হাইকোর্টে বার বার পিছচ্ছে ছাত্র সংসদ মামলার শুনানি, কেন?
এই বৈঠক শুধু এক দিনের আলোচনায় থেমে থাকার নয়। এটি শুরু এক নতুন অধ্যায়ের। যদি বাংলা সিনেমা আবার প্রেক্ষাগৃহে ফিরে আসে, যদি দর্শক ভরসা রাখেন নিজের ভাষার ছবির উপর, তবে তা শুধুমাত্র টলিউডের (টলিউড) জয় নয়, এটি বাংলার সম্মান ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে এক ঐতিহাসিক বিজয় হবে।