বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আপনি কি জানেন বিশ্বের সবথেকে রহস্যময়ি শিবলিঙ্গের সম্বন্ধে? এই রহস্যময়ি শিবলিঙ্গ আয়ারল্যান্ডে আছে। সেখানে একটি পাহাড়ি এলাকায় এই শিবলিঙ্গ আছে। শোনা যায় যে, এই শিবলিঙ্গ রহস্যময়ি জাদু শক্তির ধারকেরা কয়েকশ বছর আগে স্থাপিত করেছিল। বহুবার এই শিব লিঙ্গকে ক্ষতি করার চেষ্টাও চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু শত চেষ্টার পরেও এর কোন ক্ষতি করতে পারেনি তাঁরা। আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি মিথে একটি পাহাড় আছে। ওই এলাকাতেই ইটের ঘেরা বানিয়ে ওই শিব লিঙ্গকে স্থাপিত করা হয়েছে। তবে এই শিব লিঙ্গ কবে স্থাপিত করা হয়েছে, সেই নিয়ে এলাকাবাসী সঠিক কোন আন্দাজ করতে পারেনি। সেখানকার মানুষ এই শিব লিঙ্গকে রহস্যময়ি পাথর হিসেবে জানে। আর তাঁরা এই শিব লিঙ্গকে (ফেইল) ভাগ্যের পাথর বলে নাম দিয়েছে। সবাই এই শিব লিঙ্গের পুজাও করেন।
১৬৩২ থেকে ১৬৩৬ এর মধ্যে ফ্রান্সিসি ভিক্ষুদের একটি প্রাচীন পুঁথি ‘দ্য মাইনর্স অফ দ্য ফোর মাস্টার্স অনুযায়ী, কিছু বিশেষ জাদুর ক্ষমতা সম্পন্ন একটি দলের নেতা তুথা ডি দেনন এই শিব লিঙ্গের স্থাপনা করেছিলেন। এই পুঁথি ১৬৩২ থেকে ১৬৩৬ এর মধ্যে লেখা হয়েছিল। তুথা ডি দেনন এর মানে হল দেবী দানুর সন্তান, উনি ১৮৯৭ বিসি থেকে ১৭০০ বিসি পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে শাসন করেছিলেন। ইসাই ভিক্ষুরা পাথরের প্রজনন ক্ষমতার প্রতীক মূর্তি রুপে দেখেছিল। এই শিব লিঙ্গ এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, ৫০০ ইসা পূর্ব পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের সমস্ত রাজা রাজ্য অভিষেকের সময় ব্যাবহার করতেন।
ইউরোপিয়ান সংস্কৃতি অনুযায়ী, দেবী দানু নদীর দেবী ছিলেন। দেন্যুব, দোণ, ডনীপর আর ডিনিইয়েস্টার নদী গুলোও এর সাথে জড়িত ছিল। কয়েকটি আইরিশ গ্রন্থ অনুযায়ী, দানু দেবীর পিতা দাগদা সবথেকে ভালো ভগবান হিলেন। বৈদিক পরম্পরাতেও দানু দেবীর উল্লেখ আছে। বৈদিক পরম্পরা অনুযায়ী, দানু দেবী দক্ষের কন্যা আর কশ্যপ মুনির স্ত্রী ছিলেন। সংস্কৃতে দানু শব্দের অর্থ হল ‘বয়ে যাওয়া জল”। দক্ষের দুটি কন্যা ছিল, ওনার দ্বিতীয় কন্যা সতীর বিবাহ ভগবান শিবের সাথে হয়েছিল। বৈদিক পরম্পরায় ‘ফেইল” নামের সাথে শিব লিঙ্গের মিল আছে।
সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডে শিব লিঙ্গকে অনেকবার ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০১২ এর জুন মাসে এক ব্যাক্তি পাথর দিয়ে ১১ বার শিব লিঙ্গের উপর আক্রমণ করেছিল। এরপর ২০১৪ সালে শিব লিঙ্গে লাল আর হলুদ রঙ ফেলে শিব লিঙ্গকে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল। ওই পাহাড়ে কালা জাদু আর তন্ত্রের সাধনা করতে আসা ব্যাক্তিরা এই কাজ করে।