বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিল্লিতে বাংলা ভাষাভাষী এক পরিবারের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক ভিডিয়ো পোস্ট ঘিরে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। তবে এবার অভিযোগকারী মহিলাকে সামনে এনে অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ তুলে ধরল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)।
‘বাংলাদেশি’ বলে অপরাধ, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়
মালদহের বাসিন্দা সাজনুর পারভিন, কয়েক বছর ধরে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে থাকেন দিল্লির পাণ্ডবনগরে। তাঁর অভিযোগ, ‘বাংলাদেশি’ বলে অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। প্রথমে চারজন ব্যক্তি এসে আধার কার্ড দেখতে চায়, পরে আবারও চারজন আসে, তাঁদের মধ্যে দু’জন ছিলেন মহিলা। তারপরই শুরু হয় অত্যাচার।
সাজনুরের কথায়, “একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে আমাকে দুটি থাপ্পড় মারা হয়। বলা হয় ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে। আমি মুসলিম, কীভাবে বলব? তখন পেটে লাথি মারা হয়, ছেলেকে ফেলে দেওয়া হয়, কানে এমন মারল যে রক্ত পড়ে। পরে বলা হয়, ২৫ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেবে।” পরে তাঁর স্বামীর মাধ্যমে শাশুড়ি টাকা নিয়ে আসেন, তখন ছাড়া পান তাঁরা। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর তাঁদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে আবারও হেনস্থা চলে বলে অভিযোগ। সাজনুর জানান, “সাফ বলল, পশ্চিমবঙ্গ মানেই বাংলাদেশি। নানা জায়গায় সই করিয়ে নিয়েছে আমাদের ভয় দেখিয়ে।”
বুধবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে সাজনুরকে বসিয়ে পুরো ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কুণাল ঘোষ জানান, কলকাতা পুলিশের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করবেন সাজনুর।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার প্রথম সূত্রপাত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক্স (X)-এ একটি ভিডিয়ো পোস্টের মাধ্যমে। তাতে এক মহিলা ও শিশুর উপর পুলিশি অত্যাচারের বর্ণনা ছিল। ভিডিয়োটি প্রকাশ করে বিজেপিকে নিশানা করেন মমতা। যদিও দিল্লি পুলিশ দাবি করে, ভিডিয়োটি মিথ্যে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সম্পূর্ণ বানানো। এমনকি তারা জানায়, তদন্ত করে দেখা গিয়েছে, ওই ভিডিয়ো নাকি তৈরি হয়েছিল মালদহের এক নেতার নির্দেশে।
আরও পড়ুনঃ বেঙ্গালুরু থেকে ভারতে হামলার ছক! পুলিশের জালে আল-কায়েদার মহিলা জঙ্গি, কিভাবে নাগাল পেল পুলিশ?
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাকে ‘ফেক’ বলা হলেও সাজনুরের প্রকাশ্যে আসা, তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এখন দেখার, তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয় এবং তৃণমূলের অভিযোগ কতটা আইনি ভিত্তি পায়।