বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে একাধিক ঘটনায় বাড়ছে শাসকদলের অস্বস্তি। এবার যেমন লোকসভায় তৃণমূলের (Trinamool Congress) সংসদীয় দলের মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে নয়া বিতর্ক। দলের এক প্রবীণ সাংসদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছেন মহিলা সাংসদ। ইতিমধ্যেই হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ(WhatsApp Group) ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন ওই মহিলা এমপি (MP)। পুরো ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
প্রবীণ সাংসদের সঙ্গে কী নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) মহিলা সাংসদ?
জানা যাচ্ছে, গত শুক্রবার এই ঘটনার সূত্রপাত। সেদিন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দল সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট স্মারকলিপিতে প্রতিনিধিদের স্বাক্ষরের জায়গায় দলের ওই মহিলা সাংসদের সই ছিল না। যা নিয়ে তিনি আপত্তি করেন। কারণ অন্য সাংসদ প্রতিনিধিদের থেকে ওই মহিলা সাংসদ জানতে পারেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই তাঁদের দিয়ে স্মারকলিপি সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে তাঁকে দিয়ে সই করানো হয়নি। তবে শুক্রবার তৃণমূলের (Trinamool Congress) প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে ওই মহিলা সাংসদকে নির্বাচন কমিশনে যেতে বলা হয়েছিল। তখনকার মতো তৃণমূলের ওই মহিলা সাংসদকে জানানো হয়, তাঁর নাম হাতে লিখে দেওয়া হচ্ছে। সেই সময়ই ওই মহিলা সাংসদের উদ্দেশে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ কটাক্ষ করেন বলে খবর। জানা যাচ্ছে, প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক তৃণমূল সাংসদ এমনটাই জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ছাতা রেডি রাখুন! কিছুক্ষণেই বৃষ্টিতে ভিজবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা! আবহাওয়ার মেগা আপডেট
মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি গরম হয়ে ওঠে। অবস্থা এতটাই তেতে উঠেছিল যে কমিশনের ফুটপাথে প্রহরারত BSF ও CISF জওয়ানদের ওই মহিলা সাংসদ বলেন, প্রবীণ সাংসদ ‘দুর্ব্যবহার’ করেছেন। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। দলের প্রতিনিধিদলের বাকি সদস্যদের সামনেই এই ঘটনা ঘটে বলে খবর।
সম্পূর্ণ ঘটনায় তৃণমূলের (Trinamool Congress) প্রতিনিধিদলের বাকি সদস্যরা খানিক অবাক হয়ে যান। এরপর প্রবীণ সাংসদকে বুঝিয়েসুঝিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজ্যসভার একজন প্রবীণ সাংসদ তাঁকে শান্ত হতে বলেন বলে খবর। তবে জানা যাচ্ছে, প্রবীণ সাংসদ সহজে ঠাণ্ডা হননি। কমিশনের ভেতরে ঢুকেও তিনি নাকি বলতে থাকেন, উনি কোনও কোটায় এমপি হননি অথবা অন্য কোনও দল থেকে এসে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখাননি।
এখানেই শেষ নয়! ওই মহিলা সাংসদ প্রবীণ সাংসদের আচরণে এতটাই ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েছিলেন যে নয়াদিল্লির পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগও দায়ের করতে যাচ্ছিলেন। তৃণমূলের (TMC) সংসদীয় দল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। তবে কয়েকজন মিলে তখনকার মতো পরিস্থিতি সামাল দেন। এরপর এই জল গড়ায় দলের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ অবধি।
জানা যাচ্ছে, তৃণমূল সাংসদদের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপে ওই প্রবীণ সাংসদ মহিলা সাংসদের নাম না করেই লেখেন, তিনি ‘অপ্রয়োজনীয় নাটক তৈরি করেছেন’। সংশ্লিষ্ট মহিলা সাংসদকে ‘ভার্সেটাইল ইন্টারন্যাশানাল লেডি’ বলেও কটাক্ষ করেন বলে খবর। সেই সঙ্গেই নিজেকে ‘ফুলিশ ম্যান’ তকমা দিয়ে লেখেন, বিপদের সময় তিনি ওই মহিলা সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আর এখন তিনিই কিনা BSF দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করাতে চাইছেন।
আরও পড়ুনঃ ৭০০ কোটি তোলা হয়েছে, ৮০% গিয়েছে ভাইপোর কাছে! নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দুর
এরপরেই দলের একজন নতুন সাংসদের সঙ্গেও ওই প্রবীণ সাংসদ বচসায় জড়িয়ে পড়েন বলে খবর। ইতিমধ্যেই ওই মহিলা সাংসদ দলের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। সেই সঙ্গেই সম্পূর্ণ বিষয়টি জানিয়ে দলনেত্রী তথা তৃণমূলের (Trinamool Congress) রাজ্যসভা ও লোকসভার সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখছেন। ওই চিঠির প্রতিলিপি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পাঠানো হচ্ছে বলে খবর। এদিকে যে প্রবীণ সাংসদের আচরণে মহিলা সাংসদ মর্মাহত হয়েছেন, তিনি আবার দলের অন্দরে মমতার ‘ঘনিষ্ঠ’, ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে পরিচিত। এমতাবস্থায় এই পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।