বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন (Ration) দোকানে তৃণমূল (All India Trinamool Congress) নেতার বিতর্কিত পোস্টার। উল্লেখ্য, এমাসের প্রথম দিন থেকে গোটা দেশ এবং রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউনের দ্বিতীয় দফার রেশন বিতরণ। রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই সরকারই মানুষদের বিনামূল্যে রেশনের খাদ্য সামগ্রী বণ্টন করছে। আর এই রেশন নিতে গিয়েই হতবাক খড়গপুর শহরের মালঞ্চর ১৪নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাহকরা। রেশন দোকানের দেওয়ালে ঝুলছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশিকা। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা আছে, ‘সরকার ও সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, সরকারি পেনশন ভোগী, মাসিক আয় ১০ হাজার টাকার ওপর, সরকার বা সরকার অনুমোদিত প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি,উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, করদাতা ব্যবসায়ী, ৫ একরের উর্ধে কৃষিজমির মালিক, চারচাকা গাড়ির মালিক, এছাড়াও আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিরা ও মৃত ব্যক্তির পরিবার তাঁদের ২ টাকা কেজির রেশন কার্ড সমর্পণ করুন অন্যথায় সরকার তা বাজেয়াপ্ত করবে।” ব্যানারের নীচে লেখা আছে ‘খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ দ্বারা প্রচারিত।”
সকাল সকাল রেশন নিতে আসা গ্রাহকরা এই পোস্টার দেখে হতবাক হয়ে পড়েছেন। প্রশ্ন হল, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী (Mamata Banerjee) নিজেই ঘোষণা করেছেন যে রাজ্যের প্রতিটি ব্যাক্তিকে রেশন দেওয়া হবে বিনামূল্যে, সেখানে রেশন দোকানে এরকম পোস্টার লাগাল কে? খড়গপুর শহরের ভার প্রাপ্ত খাদ্য পরিদর্শক সৌম্য চ্যাটার্জি জানান, ‘আমাদের তরফ থেকে এরকম কোন পোস্টার লাগানো হয়নি, আর না রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এরকম কোন নির্দেশিকা এসেছে।” উনি এই ঘটনার দায় বিরোধী দল গুলোর উপর চাপিয়ে দিয়েছেন।
আরেকদিকে ওই রেশন দোকানের লাগোয়া আরও কয়েকটি রেশন দোকান আছে, সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে, ওই পোস্টার তৃণমূল নেতা শৈবাল চ্যাটার্জি লাগিয়েছেন। শৈবাল চ্যাটার্জি এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। এমনকি তিনি খড়্গপুর শহরের বিধায়ক তথা পুর প্রধানের খুব ঘনিষ্ঠ বলেই জানা যায়।
আরেকদিকে তৃণমূল নেতা শৈবাল চ্যাটার্জিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানায় যায়, তিনিই এই পোস্টার লাগিয়েছেন। ওনার বক্তব্য অনুযায়ী, এই পোস্টার লাগানোর পিছনে ওনার কোন অসাধু মনোভাব ছিল না। উনি শুধু চেয়েছিলেন এলাকার প্রকৃত গরীব দুস্থরা যেন ঠিক ভাবে রেশন পান। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, কার প্রয়োজন আর কার প্রয়োজন নেই, এটা ঠিক করার তিনিই বা কে?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাহলে উনিই বা কেন উপযাজক হয়ে এমন পোস্টার লাগাচ্ছেন? এতে রেশন ডিলারের সুবিধা করিয়ে দেওয়ার কোন মতলব নেই তো? প্রশ্ন উঠছে চারিদিক থেকে।