বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরভোটের দামামা বেজে গেছে রাজ্যে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে ১০৮টি পুরসভার নির্বাচন। সেই মতন তুঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারের কাজ। এর মধ্যেই এবার এক তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারের পোস্টারকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠল রাজ্যে। পোস্টারটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেবী দুর্গা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মহিষাসুর হিসেবে দেখানো হয়েছে। ব্যাপারটির তীব্র নিন্দা করে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাদের অভিযোগ এহেন পোস্টারের মাধ্যমে সনাতন ধর্ম এবং নরেন্দ্র মোদীর অপমান করছে তৃণমূল।
মেদিনীপুর জেলার মদনপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অনিমা সাহা। তাঁরই প্রচারে দেখা যায় এই বিতর্কিত পোস্টার। সুপার ইমপোজ করে বানানো এই পোস্টারে দেখা যায় দেবী দুর্গার মুখের জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহিষাসুরের মুখের জায়গায় নরেন্দ্র মোদী এবং মহিষের মুখের জায়গায় অমিত শাহ এর মুখ বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে দেবী দুর্গা অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরেকটি রূপ হিসেবে দেখানো হয়েছে জগদ্ধাত্রী রূপী অনিমা সাহাকে। কয়েকটি ছাগলের ছবি দিয়ে দেখানে বিরোধীদের নাম লেখাও রয়েছে। দুর্গার দশ হাতে দশ অস্ত্রের বদলে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্প এবং কর্মসূচির নাম লেখা হয়েছে।
স্বভাবতই এই ছবি সামনে আসতেই বিতর্কের ঝড় ওঠে রাজ্যজুড়ে। তীব্র সমালোচনা শুরু হয় এলাকাতেও। স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী বিপুল আর্য অভিযোগ তোলেন যে এই ধরণের পোস্টারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গ সঙ্গে সনাতন হিন্দু ধর্মকেও অপমান করছে তৃণমূল। এই পোস্টারের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে বলেও জানিয়েছে বিরোধী শিবির।
যদিও এই পোস্টার সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই তৃণমূল প্রার্থী। অনিমা সাহা জানান এই পোস্টার কে বা কারা লাগিয়েছে সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি। এই ধরণের প্রচার এবং কাজ সমর্থন করেন না বলেই জানিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর পালটা অভিযোগ বিরোধীরাই চক্রান্ত করে এসব করেছে। তিনি যদি আগে থেকে ব্যাপারটি জানতেন তাহলে কিছুতেই এটি হতে দিতেন না এই দাবিও করতে দেখা গেছে তাঁকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দলের অন্দরে কোন্দলের জেরে জেরবার তৃণমূল। পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ঝামেলা নিত্যসঙ্গী দলের। হাল ধরতে বহিষ্কারের পথেই হেঁটেছে শাসক দল। ৭ জেলার মোট ৪৪ জন বিক্ষুব্ধ নেতা এবং নির্দল প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। এহেন পরিস্থিতিতে ভোটের মুখে এই পোস্টার বিতর্ক যে অস্বস্তি খানিক হলেও বাড়ালো ঘাসফুল শিবিরের তা বলাই বাহুল্য।