বাংলা হান্ট ডেস্ক: কার ভাগ্য কখন যে ঘুরে যায় তা কেউই বলতে পারেনা। ঠিক সেইরকমই ঘটনা ঘটেছে হুগলির খানাকুলের চিংড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক ঈশ্বরের সাথে। একসময়ে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করলেও ধীরে ধীরে রাজনীতিতে প্রবেশ করে আজ তিনি দু’বারের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছেন। পাশাপাশি স্ত্রীকে বানিয়েছেন উপ-প্রধানও। তবে, বর্তমানে কার্তিকের বাড়ির কারণেই তিনি উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে।
মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতাদের যেসব প্রাসাদোপম বাড়ি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সেই তালিকায় যুক্ত রয়েছে কার্তিকের বাড়িটিও। গ্রামের বাসিন্দাদের কাচা-পাকা বাড়ির মধ্যেই আকাশ ছুঁয়েছে ঈশ্বরের কয়েক কোটি টাকার এই বাড়ি। তারপর থেকেই তিনি উঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারের একাধিক কাজের টাকা তছরুপের ফলেই ওই প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি হয়েছে। এমনকি ওই বাড়িটি খাস জমিতে তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, “খাস জমিকে ভরিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন ঈশ্বর। ওখানে সরকারি আবাসন তৈরির কথা থাকলেও তা হয়নি। বাড়িটির দাম প্রায় সাত থেকে আট কোটি টাকা হবে। প্রতিবাদ করতে গেলে জোটে হুমকি আর পুলিশের অত্যাচার।”
তবে শুধু বিরোধীরাই নয়, পাশাপাশি ঈশ্বরের দলের একাধিক লোকজনও তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। কেউ অভিযোগের সুরে জানিয়েছেন, “উনি আর ওনার স্ত্রী নিজেদের মতো করে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। দলের একটা অংশ ওনাদের ভয়েই কথা বলতে পারেনা। প্রচুর চুরি হচ্ছে। এমনিতেই খানাকুল বন্যা কবলিত এলাকা হওয়ায় বিপুল হারে ত্রাণের জিনিসপত্র এসেছে। ওগুলোর কোনো হিসেব নেই।”
অন্যদিকে একজন পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, “পঞ্চায়েতে গেলে আমাদের ঢুকতে দেয় না। এমনকি মিটিংয়ে গেলেও গালিগালাজ করা হয়। মূলত স্বামী-স্ত্রী মিলেই পঞ্চায়েতটি চালাচ্ছেন।” যদিও, সমস্ত অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ঈশ্বর। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, “আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। আমার নিজস্ব সাত থেকে আট বিঘা জমি রয়েছে। জানিনা আমার বিরুদ্ধে কেন কুৎসা রটানো হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন বর্তমানে পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ঈশ্বর। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পর রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে যোগদান করেন তিনি। আর তারপরেই ২০১৩ সালে প্রথমবারের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পদে নির্বাচিত হন কার্তিক। ফের ২০১৮ সালে সেই পদে আসীন থাকেন তিনি। তবে ভোটে জিতে উপ-প্রধানের আসনে বসেন তাঁর স্ত্রী নীলিমাও।