বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাজস্থানে (Rajasthan) ট্রাকভর্তি বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেওয়ার অঞ্চলে। রাজসমন্দ জেলার একটি ব্যস্ত সড়ক থেকে আটক হওয়া ট্রাক থেকে উদ্ধার হয়েছে ১০৯ কার্টন বিস্ফোরক সামগ্রী। তার মধ্যে রয়েছে ৯৮১টি জিলেটিন স্টিক, ৯৩টি ডিটোনেটর এবং একটি সেফটি ফিউজ, যার বিস্তার ক্ষমতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এই পরিমাণ বিস্ফোরক একসঙ্গে বিস্ফোরিত হলে অন্তত ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত। গোটা ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ—সবার মধ্যেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
রাজস্থানে (Rajasthan) ট্রাক ভর্তি বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সূত্রে আগে থেকেই বিস্ফোরক পাচারের খবর পেয়েছিল রাজস্থান (Rajasthan) পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই রাজসমন্দ এলাকায় আগে থেকে তল্লাশির প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সন্দেহভাজন ট্রাকটি ওই রুটেই যাবে বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত ছিল। তাই শহরের প্রধান রাস্তার উপর ব্যারিকেড করে চেকিং শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। তল্লাশির সময় সন্দেহ হলে পুলিশ ট্রাকটিকে থামায় এবং চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে জেরা শুরু করে। এরপরই ট্রাকের ভেতর কার্টন কার্টন বিস্ফোরকের হদিশ মেলে। মুহূর্তে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: “সরকারি টাকায় বাবরি মসজিদ তৈরি করতে চেয়েছিলেন নেহেরু, বাধা দেন বল্লভভাই”, বিস্ফোরক দাবি রাজনাথের
ঘটনাস্থলেই গ্রেফতার করা হয় ভগবত সিংহ এবং হিম্মত সিংহ নামে দুই ব্যক্তিকে। দু’জনই রাজস্থানের বাসিন্দা এবং ট্রাকের সঙ্গে ছিলেন। পুলিশি জেরায় তাঁরা সন্তোষজনক কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি যে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক কোথা থেকে এল এবং কোথায় পাঠানো হচ্ছিল। তাঁদের জবাবে অসঙ্গতি ও অস্পষ্টতা থাকায় পুলিশ তাঁদের তৎক্ষণাৎ গ্রেফতার করে। তাদের মোবাইল ফোন, নথি এবং ট্রাকের সমস্ত কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, এটি কোনও বৃহত্তর চক্রের কাজ, যার সঙ্গে আরও কয়েকজন যুক্ত থাকতে পারে।
তদন্তে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে, রাজস্থানের (Rajasthan) বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ পাথর খাদানের রমরমা আছে এবং সেগুলিতে প্রায়ই বিস্ফোরক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। অনুমান করা হচ্ছে, এই বিপুল পরিমাণ জিলেটিন স্টিক এবং ডিটোনেটরও হয়তো কোনও বেআইনি খাদান খননের উদ্দেশ্যেই পাচার করা হচ্ছিল। তবে এটি কি শুধুই খাদানের জন্য, নাকি অন্য কোনও অপরাধমূলক কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল—তা জানতে তদন্ত আরও জোরদার করা হয়েছে। বিস্ফোরক পদার্থগুলির উৎস, চালান কোথা থেকে এসেছে এবং এটি কোনও সংগঠিত নেটওয়ার্কের অংশ কি না, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুন: অভিজিৎ গাঙ্গুলীর রায় খারিজ, প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বহাল রেখে হাইকোর্ট জানাল…
এদিকে পুলিশ পুরো ট্রাকটি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং ফরেনসিক টিমকে দিয়ে বিস্ফোরকগুলির পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজস্থানের প্রশাসন ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং অন্য কোথাও এমন অবৈধ পরিবহণ হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর বিস্ফোরক পরিবহন সংক্রান্ত সমস্ত লাইসেন্স ও রুট চেক আরও কড়া করা হবে। রাজসমন্দে উদ্ধার হওয়া এই বিপুল বিস্ফোরকের চালান রাজস্থানের (Rajasthan) নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এবং তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ পুরো ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।












