বাংলাহান্ট ডেস্ক: ঘোষণা হয়ে গেল নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০২৫ (Nobel Peace Prize 2025)-এর প্রাপকের নাম। মন ভাঙল মার্কিন প্রেসিডেন্টের। ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিদার হিসেবে নিজেকে প্রকাশ্যে তুলে ধরেছিলেন। একাধিকবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে ও সংবাদমাধ্যমের সামনে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তাঁর কূটনৈতিক উদ্যোগেই বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাত ও যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে, তাই শান্তির জন্য নোবেল তাঁরই প্রাপ্য। কিন্তু সেই আশা ভঙ্গ করে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাডো।
ট্রাম্পের হাতছাড়া নোবেল শান্তি পুরস্কার (Nobel Peace Prize 2025)
নোবেল (Nobel Peace Prize 2025) কমিটির ঘোষণায় জানানো হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করছেন মারিয়া মাচাডো। দেশজুড়ে দমননীতি ও স্বৈরশাসনের মুখে থেকেও তিনি নির্ভীকভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি তুলে ধরেছেন এবং অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, এমন এক দেশে রাজনৈতিক কাজ করা যেখানে সরকার ভিন্নমতকে দমন করে, তা অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু মারিয়া সেই বাধা অতিক্রম করে ন্যায় ও স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের ওপর নয়া চ্যালেঞ্জ? কাশ্মীরি মেয়েদের “টার্গেট” করে নতুন বাহিনীর ঘোষণা মাসুদ আজহারের
নোবেল শান্তি পুরস্কারের (Nobel Peace Prize 2025) সঙ্গে মারিয়া মাচাডো পাবেন একখানি সোনার পদক, একটি সনদ এবং ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা অর্থমূল্য। আগামী ১০ ডিসেম্বর নরওয়ের অসলো শহরে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁকে এই সম্মান প্রদান করা হবে।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় ধাক্কা। কয়েকটি দেশ— বিশেষ করে ইজরায়েল ও পাকিস্তান— জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের নোবেল (Nobel Peace Prize 2025) মনোনয়নের দাবি তুলেছিল। তাদের যুক্তি ছিল, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিচুক্তি ও আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প বিশ্বশান্তিতে ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু নোবেল কমিটি সেই দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে মানবাধিকারের সংগ্রামে নিযুক্ত মাচাডোকেই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন:ফুঁসছে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত! ২-৩ ঘণ্টায় ঝড়-বৃষ্টির তাণ্ডব দক্ষিণবঙ্গের ৫ জেলায়, কবে কমবে দুর্যোগ?
পুরস্কার ঘোষণার আগে ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “আমি আটটি যুদ্ধ থামিয়েছি। এর আগে কখনও কেউ তা করতে পারেনি। এখন নোবেল কমিটি যা খুশি সিদ্ধান্ত নিক।” তবে নোবেল (Nobel Peace Prize 2025) কমিটি রাজনৈতিক প্রচারণা নয়, মানবতার প্রতি অবদানকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
এই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়ছে। গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করা এক নারীকে সম্মান জানানোয় অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা নোবেল (Nobel Peace Prize 2025) কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। অন্যদিকে, ট্রাম্পের অনুগামীরা এটিকে ‘রাজনৈতিক পক্ষপাত’ বলে সমালোচনা করেছেন। তবে বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, মারিয়া কোরিনা মাচাডোর এই জয় নিঃসন্দেহে ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।