বাংলাহান্ট ডেস্ক- বছরের শেষেই ভারতে (India) আয়োজিত হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত কোয়াড সম্মেলন (Quad Summit)। কিন্তু সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) উপস্থিতি থাকবে না। শনিবার ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত নয়াদিল্লি (New Delhi) কিংবা ওয়াশিংটনের Washington) পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ফলে বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
ভারত সফর বাতিল ট্রাম্পের (India)
আমেরিকা ও ভারতের সম্পর্ক ঘিরে ফের এক নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে। চলতি বছরের শেষ দিকে কোয়াড সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসার কথা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প তাঁর ভারত সফর আপাতত বাতিল করেছেন। যদিও ভারত কিংবা আমেরিকা—কোনও পক্ষ থেকেই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন:-বিদেশের মাটিতেও বাঙালিয়ানার জয়! বিলেতে মহাসমারোহে সম্পন্ন হচ্ছে UKBC-র বার্ষিক আয়োজন
‘দ্য নোবেল প্রাইজ অ্যান্ড আ টেস্টি ফোন কল: হাউ দ্য ট্রাম্প-মোদি রিলেশনশিপ আনর্যাভেল্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত ট্রাম্প-মোদীর সম্পর্কের টানাপোড়েনই এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে। বছর শেষের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সমস্ত পরিকল্পনা বাতিল করেছেন ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের বারবার দাবি, তিনি নাকি সংঘাত থামিয়েছেন, এসবেই বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন মোদি। সেটাই ছিল সম্পর্কের অবনতির শুরু।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৭ জুন ট্রাম্প একাধিকবার ফোন করেন নরেন্দ্র মোদিকে। একবার দীর্ঘ কথোপকথন হয় বটে, তবে তার পর আর ফোন ধরেননি মোদি। এখান থেকেই দূরত্ব আরও বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে বেশ কিছু টানাপোড়েন প্রকট হয়েছে। ভারতের উপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। সব মিলিয়ে ক্রমশ খারাপ হয়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক সমীকরণ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প একাধিকবার মোদীর কাছে নিজের দাবি তুলে ধরেছেন যে, তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য এবং ভারত যেন তাঁকে মনোনীত করে। কিন্তু মোদি সেই দাবি মানতে রাজি হননি। ফলে সম্পর্কের শীতলতা আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন:- স্বামীর চোখের সামনেই স্ত্রীকে গণধর্ষণ, ৭ দোষীর ২০ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করল আদালত
কোয়াডে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং আমেরিকা, এই চার দেশ মিলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের আগ্রাসন ঠেকানোর কৌশল নিয়েছিল। বাইডেন শাসনে একসময় অভিযোগ উঠেছিল, কোয়াড গুরুত্ব হারাচ্ছে। তবে সম্প্রতি চীনের আগ্রাসন বাড়তে থাকায় ফের গুরুত্ব পায় এই জোট। জানুয়ারিতেই আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল কোয়াড বৈঠক, যেখানে ভারত স্পষ্ট বার্তা দেয়—ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোনওভাবেই দাদাগিরি বরদাস্ত করা হবে না।
কিন্তু বছর ঘুরতেই ছবিটা একেবারে পাল্টে গেছে। শুল্কবোমার কোপে ক্ষুব্ধ ভারত, আর ট্রাম্প নিজে ভারত সফর বাতিল করে দিলেন। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে এগিয়ে এসেছে চিন। রবিবার এসসিও বৈঠকের আগে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফলে কোয়াডের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।