বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নাগরাকাটায় (Nagrakata Incident) বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক ডঃ শঙ্কর ঘোষের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই ব্যক্তিকে। জলপাইগুড়ি পুলিশ সূত্রে খবর, সংসদ ও বিধায়কের উপর হামলার ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে একজনকে জলপাইগুড়ি থেকে এবং অপরজনকে আলিপুরদুয়ার জেলার ভারত-ভুটান সীমান্তের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
নাগরাকাটার ঘটনার (Nagrakata Incident) তদন্তে পুলিশি অভিযান অব্যাহত
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খান্ডভালে উমেশ গণপত জানান, “নাগরাকাটার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুইজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। বাকি অভিযুক্তদেরও খুব শীঘ্রই পাকড়াও করা হবে।” পুলিশ জানিয়েছে, মোট আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি অভিযুক্তদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, কিছু অভিযুক্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে এবং কেউ কেউ সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার মালদা উত্তর কেন্দ্রের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক ডঃ শঙ্কর ঘোষ নাগরাকাটা (Nagrakata Incident) এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, তাঁদের গাড়ি ঘিরে ধরে একদল উত্তেজিত জনতা, শুরু হয় হামলা। বিজেপি দাবি করে, “এটি তৃণমূলের পরিকল্পিত আক্রমণ। জনতার পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আমাদের নেতাদের ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখানো হয়েছে।” তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শাসকদলের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি রাজনৈতিক নাটক করছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় টানা বৃষ্টিতে বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরেও প্রশাসনিক তৎপরতার অভাব ছিল প্রবল। বহু মানুষ ঘরছাড়া, রাস্তা-ঘাট বিচ্ছিন্ন, ত্রাণ পৌঁছচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জনতার ক্ষোভ দীর্ঘদিনের অবহেলার বিরুদ্ধে ফেটে পড়ে। অনেকে অভিযোগ করেন, “নির্বাচনের সময় বাদে কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। বন্যার এই দুর্দিনেও রাজনৈতিক নেতাদের দেখা মেলে না।” সেই ক্ষোভই নাকি আচমকা উত্তেজনার রূপ নেয়।
এই হামলার (Nagrakata Incident) পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিজেপি রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব, অন্যদিকে তৃণমূল পাল্টা বলছে বিজেপি সহানুভূতি আদায়ে নাটক করছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনার প্রভাব উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করা হবে।