বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাখিদের আমরা সকলেই ভালোবাসি। অনেকে আবার বাড়িতেই পাখি পুষতে পছন্দ করেন। কিন্তু, এবার পাখিদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার এক অভিনব নিদর্শনের প্রসঙ্গ সামনে এল। যা শুনলে অবাক হবেন যে কেউই। জানা গিয়েছে যে, রাজস্থানের বুন্দি জেলার সিসোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোভাল্যা গ্রামে, দুই ভাই তাঁদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে পাখি এবং প্রকৃতিকে ভালবাসার অনুপ্রেরণা পেয়ে প্রায় ২ হাজার পাখির জন্য ৩৫ তলা অর্থাৎ ৫১ ফুট উঁচু একটি “বার্ড হাউস” তৈরি করেছেন।
এমনকি, তাঁরা দু’জনই তাঁদের টিনের ঘরকে কংক্রিটের ঘরে পরিণত না করে বরং পাখিদের জন্য আশ্রয়স্থল তৈরি করে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জানা গিয়েছে, রাধেশ্যাম মীনা ও তাঁর বড় ভাই ভারতরাজ মীনা, পাখিদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি “বার্ড হাউস” তৈরি করেছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, শৈশবে তাঁদের মা ফরি বাই এবং বাবা দেবলাল বাড়ির উঠোনে তৈরি মঞ্চে পাখিদের খাবার খেতে দিতেন। সেখান থেকেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে দুই ভাই তাঁদের ঘর ঠিক করার আগে পাখিদের জন্য একটি ঘর তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন।
পাশাপাশি, তাঁরা আরও জানান, এই বার্ড হাউসের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩৫ তলা উঁচু এই বার্ড হাউসে মোট ৫৬০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলিতে প্রায় দু’হাজার পাখির থাকার ও খাওয়ারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
দুই ভাইই তাঁদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন:
দুই ভাই তাঁদের মা ফরি বাই এবং বাবা দেবলালের অনুপ্রেরণায়, এই বার্ড হাউসের নাম বাবা-মায়ের নামের সাথে সাদৃশ্য রেখে ভেবেছেন। পাশাপাশি, সেটির নাম রাখা হয়েছে “ফরিদেব”। এই প্রসঙ্গে রাধেশ্যাম মীনা জানান, এই বার্ড হাউসের উচ্চতা ৫১ ফুট। পাখির ঘর নির্মাণের জন্য প্রথমে ৩ x ৩ ফুট প্রস্থের ১২ ফুট উঁচু পিলার তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, এর ওপর প্লাটফর্ম তৈরি করে ৩৫ টি তলা তৈরি করা হয়েছে এবং প্রতিটি তলায় ১৬ টি বাড়ি রয়েছে।
অর্থাৎ, বার্ড হাউসে পাখিদের জন্য মোট ৫৬০ টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, প্রতিটি তলার প্ল্যাটফর্ম বানানো হয়েছে অষ্টভুজাকারে এবং প্রতিটি বাড়ির আকার রাখা হয়েছে ১৩ বাই ১৩ ইঞ্চি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই বার্ড হাউসে শীত, গ্রীষ্ম ও বৃষ্টিতেও নিরাপদে থাকতে পারবে দু’হাজার পাখি। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “পাখির ঘর নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচনের সময়ে আমরা গাছের সংখ্যা এবং বসবাসকারী পাখির সংখ্যার প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছি।”