বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিন (China) দীর্ঘদিন ধরেই তার প্রতিবেশীদের সামুদ্রিক অঞ্চলে আগ্রাসীভাবে অনুপ্রবেশ করে আসছে। কিন্তু এখন চিন কড়া জবাব পেতে চলেছে। মূলত, চিনা নৌবাহিনীর আগ্রাসী মনোভাবের জবাব দিতে প্রতিবেশী দুই দেশ জাপান (Japan) ও ফিলিপিন্স (Philippines) এমন অস্ত্র মোতায়েন করতে চলেছে, যেগুলি চিনের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হবে। মার্চের শেষের দিকে ফিলিপিন্স তার প্রথম অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ মিসাইল ব্রহ্মোস (BrahMos) পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, জাপান তার নিরাপত্তা বাহিনীকে টমাহক (Tomahawk) ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ শুরু করার পরিকল্পনা করছে। এতে বোঝা যায় এই এলাকাগুলিতে চিনকে মোকাবেলা করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
ব্রেকিং ডিফেন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপিন্স ও জাপানের এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা কারণ ছাড়া ঘটছে না। এর জন্য দায়ী চিন। যারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ঘাতক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে নিয়োজিত রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (IISS) অনুসারে, বিদেশে বেজিংয়ের পদক্ষেপ এবং দেশীয় স্তরে চিন ও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে এবং অন্যান্য দেশগুলিকে এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে তাদের দূরপাল্লার স্ট্রাইক সক্ষমতা উন্নত করতে অনুপ্রাণিত করছে।
ভারত থেকে ব্রহ্মোস মিসাইল কিনছে ফিলিপিন্স: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে, ফিলিপিন্স ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ভারতের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং এইভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম বিদেশি ক্রেতা হয়ে ওঠে ওই দেশ। ফিলিপিন্সের তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব, ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তিতে স্বাক্ষর করার সময় বলেছিলেন যে “বিশ্বের দ্রুততম সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হিসাবে, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রগুলি আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং অধিকারকে বিঘ্নিত করার যে কোনও প্রচেষ্টার সঠিক জবাব দেবে।”
উল্লেখ্য যে, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ভারত ও রাশিয়া যৌথভাবে তৈরি করেছে। ক্ষেপণাস্ত্রটির রেঞ্জ হল ২৯০ কিমি। এটি স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ এবং ফিলিপিন্স ও তাইওয়ানের মধ্যে থাকা কৌশলগত প্রণালীর কাছাকাছি পৌঁছতে পারে।। দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন ফিলিপিন্সকে বিপজ্জনক অস্ত্রের দিকে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে। চিনের আগ্রাসনের সর্বশেষ প্রমাণ হল গত ৪ মার্চের ঘটনা। সেই সময়ে চিনা উপকূলরক্ষী জাহাজ ফিলিপিন্সের একটি জাহাজে জল কামান নিক্ষেপ করেছিল। যেখানে চারজন ক্রু সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুন: শিরে সংক্রান্তি! ভারত, ইরান, আফগানিস্তানের মাঝে বিশ্রী ভাবে ফাঁসল পাকিস্তান! সংকটে অস্তিত্ব
জাপানও ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে: জানা গিয়েছে যে, জাপান প্রাথমিকভাবে ২০২৬ এবং ২০২৭ সালের মধ্যে টমাহকের সর্বশেষ সংস্করণ ব্লক V-র ৪০০ টি ক্ষেপণাস্ত্র কেনার এবং এজিস ব্যালিস্টিক-মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সজ্জিত জাপানি ডেস্ট্রয়ারে মোতায়েন করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু, চিনের সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে, জাপান ২০২৫ সালের মধ্যেই তার পুরনো রূপ Block-IV-এর সাথে Block-V প্রতিস্থাপন করার অনুরোধ করেছিল। যেটির মঞ্জুরি দিয়েছে আমেরিকা। এমতাবস্থায়, জাপানের নৌবাহিনীর সদস্যরা এখন মার্চের শেষের দিকে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ শুরু করবে।