বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ দুপুরে মন্ত্রীসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূল (All India Trinamool Congress) বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা। ওনার পদত্যাগের পর নবান্নে রাজ্যের মন্ত্রীসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) লক্ষ্মীরতন শুক্লার প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘লক্ষ্মী খুব ভালো ছেলে। ও পদত্যাগ করতে পারে। ওঁর চিঠি পেয়েছি, সেই চিঠিতে মন্ত্রীত্ব নিয়ে কিছুই বলা হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবরকম পদ থেকে ও অব্যাহতি চায় বলে চিঠিতে লিখেছে। আমি রাজ্যপালকে এই নিয়ে চিঠি লিখব।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায় এটা বোঝা গিয়েছে যে, লক্ষ্মীরতন শুক্লা চিঠিতে মন্ত্রীত্ব ছাড়ার কথা বলেন নি, উল্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সন্মান রেখে তিনি ওনাকেই বলেছেন তাকে যেন মন্ত্রীসভা থেকে অপসারণ করে দেওয়া হয়। তবে শুধু লক্ষ্মীই নন, তৃণমূলকে ভাবাচ্ছে হাওড়ার আরও দুই বিধায়ক। যাদের মধ্যে একজন আবার রাজ্যর মন্ত্রী।
রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত কয়েকমাস ধরে তৃণমূলের চিন্তা বাড়িয়ে চলেছেন। দল তথা দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মন্তব্য করা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আবারও রাজ্যের মন্ত্রীসভার বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন। এই নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা। আজ সকালে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে বৈঠক ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের, সকালের সেই বৈঠকও এড়িয়ে যান তিনি। এরপর বিকেলের ক্যাবিনেট বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি।
সুত্রের খবর অনুযায়ী, শরীর খারাপের জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে বৈঠকে থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ এই নিয়ে তিনি চারটি বৈঠকে অনুপস্থিত রইলেন। বারবার ওনার মন্ত্রীসভার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা নিয়ে জোর জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বিগত কিছুদিন ধরে তিনি দলীয় কর্মসূচিতেও অংশ নিচ্ছেন না। বলাই বাহুল্য ওনার এহেন কাজ বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা আরও উস্কে দিচ্ছে।
এছাড়াও তৃণমূলের আরেক বিধায়কের বেসুরো হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে শাসক দলের। বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া বেশ কিছুদিন ধরেই দলের থেকে একটু উল্টো পথেই হাঁটছেন। উনি এর আগে দলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আর এবার তিনি লক্ষ্মীরতন শুক্লার পাশে দাঁড়ালেন।
তিনি লক্ষ্মীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘অকারণে ব্লকস্তরের নেতাদের কাছে অপমানিত হতে হয়। বেইমানরা কাজ করতে দেয় না। উইপোকার মতো কুরে কুরে খেয়ে দলটাকে শেষ করে দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, ‘দলের কিছু নিম্ন মানসিকতার লোক ক্রমাগত সবাইকে বিরক্ত করে যাচ্ছে। তাঁরা করতে দেয় না, কাজ করলে জ্বালাতন করে। তাঁরা বিধায়কদের খাটো করতে চায়।”
বৈশালী ডালমিয়া বলেন, ‘অন্য দল কোনদিনও ছোট না করলেও, দলেরই কাউন্সিলর আর ব্লক সভাপতিরা বিধায়কদের অপমান করছে। কাল থেকেই হয়ত লক্ষ্মীকে বেইমান বলাও শুরু করে দেবে ওঁরা। এরাই উইপোকার মতো দলটাকে খাচ্ছে। পুরনো কর্মী থেকে শুরু করে নতুন, কাউকেই কাজ করতে দিচ্ছে না ওঁরা। এরাই সবথেকে বড় বেইমান।” বৈশালী ডালমিয়ার এহেন মন্তব্য তৃণমূলের চিন্তা যে আরও বাড়িয়ে তুলবে সেটা বলাই বাহুল্য।