বাংলাহান্ট ডেস্ক : বর্তমান সময়ে রাজনীতি একটা শিল্পে পরিণত হয়েছে। রাজনীতি বর্তমানে একটা অংশের কাছে শুধুই দুর্নীতি ও টাকা রোজগারের পথ। কিন্তু এর মাঝেও রয়েছে কিছু ব্যতিক্রম। আজ আমরা এমনই এক ব্যতিক্রমী নেত্রীকে নিয়ে কথা বলছি। এই নেত্রী বসিরহাটের (Basirhat) তৃণমূলের (All India Trinamool Congress) পঞ্চায়েত প্রধান। তার ঘরের চাল ছাওয়া ত্রিপল দিয়ে।
তিনি সংসার চালান বিড়ি বেঁধে (Tying Beedis)। যেখানে প্রতিদিন একের পর এক শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের দুর্নীতির খবর সামনে আসছে, সেখানে বসিরহাটের পঞ্চায়েত প্রধান সুপর্ণা ব্যাকরণ বইয়ের “ব্যতিক্রমও” শব্দের মতো। সুপর্ণা দাস বসিরহাটের ১ নম্বর ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। সামান্য বৃষ্টি হলেই তার বাড়ি ভেসে যায় জলে।
জানা গিয়েছে, বাড়িতে রান্না করেন পাতা জোগাড় করে। তারপর স্বামী-ছেলেকে খাইয়ে পরিষেবা দিতে যান সাধারণ মানুষকে। সুপর্ণা তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত হন ২০১৮ সালে। এরপর তিনি শপথ নেন নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হিসাবে। সুপর্ণার স্বামী নিত্য দাস একজন সেলুনের কর্মী। ছোট্ট একটি ঘরে দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে অভাবের সাথে দিন কাটান সুপর্ণা।
সংসারের সব কাজ সামলে অফিসে যান। সুপর্ণা জানিয়েছেন, “সকালে উঠে ঘরের কাজ করার পর পঞ্চায়েত অফিসে যাই। কাজ সেরে ফিরে বিড়ি বাঁধতে বসি। একটু যাতে সংসারের সুরাহা হয়।” সুপর্ণা দাসের স্বামী নিত্য দাস বলছেন, “সেলুনে চুল-দাড়ি কাটি আমি। ২০০-৩০০ টাকা আয় হয় দিনে। আবার কখনো তাও রোজগার হয় না। কোনরকমে সংসার চলে আমাদের।”
গ্রামের মানুষের কাছে সুপর্ণা দাস এক ব্যতিক্রমে চরিত্র। যেখানে অন্যান্য পঞ্চায়েত প্রধানরা বাড়ি-গাড়ি করে রাজার হালে দিন কাটাচ্ছেন, সেখানে সুপর্ণা প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছেন জীবন অতিবাহিত করার জন্য। আগামী পঞ্চায়েত ভোট সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুপর্ণা জানান, “এর পরের পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পাবো কিনা সময় বলবে। যদি আবার জিতি তাহলে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করব।”