বাংলাহান্ট ডেস্ক: জাতিসংঘের মঞ্চে ফের একবার ভারত (India) ও চিনকে ঘিরে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্র চালু রাখার জ্বালানি জোগাচ্ছে ভারত ও চিন। কিন্তু মাত্র একদিনের মধ্যেই সেই দাবি নস্যাৎ করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্পষ্ট জানালেন, ভারতকে তিনি ইউক্রেনের অনেকাংশে মিত্র বলেই মনে করেন।
ভারতকে (India) পাশে চায় ইউক্রেন:
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, “আমার মতে ভারত (India) মূলত আমাদের পাশেই রয়েছে।” তবে তিনি ভারতের রুশ জ্বালানি কেনার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাননি। তাঁর স্বীকারোক্তি, “হ্যাঁ, জ্বালানি নিয়ে আমাদেরও প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটা সামলে নিতে পারবেন। আমরা সব কিছু করব যাতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না হয়। ভারতকেও রুশ জ্বালানি ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান নতুনভাবে ভাবতে হবে।”
আরও পড়ুন:মাত্র ২ লক্ষ টাকায় শুরু স্টার্টআপ! আজ ১৫ টি শহরে ছড়িয়েছে ব্যবসা, অবাক করবে বিনীতের কাহিনি
এর আগে মঙ্গলবার জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, “চিন ও ভারতই (India) রুশ তেল কিনে বর্তমান যুদ্ধে রশদ জোগাচ্ছে।” তাঁর সেই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে চর্চা শুরু হলেও, বুধবার জেলেনস্কির বক্তব্য পরিস্থিতিকে অন্য মোড়ে নিয়ে যায়।
ভারত (India) বারবারই স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাশিয়ার থেকে তেল কিনে তারা কোনও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে না। বরং নয়াদিল্লি জানিয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ সব সময়ই সর্বাধিক অগ্রাধিকার পাবে। এই অবস্থান থেকে সরার কোনও পরিকল্পনাও নেই।
অন্যদিকে, সমালোচনার মুখে পড়েছে আমেরিকাও। অভিযোগ উঠেছে, তারা নিজেরাও বিভিন্ন সময়ে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করেছে। ফলে ট্রাম্পের অভিযোগ কতটা যৌক্তিক, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা (India)।
আরও পড়ুন: ঘনিয়ে আসছে বিপদ? আচমকাই জেগে উঠল ভারতের একমাত্র আগ্নেয়গিরি, দেখুন ভিডিও
অর্থনীতির দিক থেকেও রুশ তেল ভারতের (India) জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। সরকারি হিসাব বলছে, গত সাড়ে তিন বছরে অন্তত ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় যার অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে পশ্চিমী দেশগুলো মস্কোর উপর পরপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। কিন্তু ভারত (India) তেল আমদানি বন্ধ করেনি। সেই সিদ্ধান্ত বারবার ওয়াশিংটনের বিরক্তির কারণ হয়েছে। এবারও জাতিসংঘের অধিবেশনে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন ট্রাম্প। তবে জেলেনস্কির পাল্টা মন্তব্যে স্পষ্ট, নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইউক্রেন আপাতত সতর্ক পথেই হাঁটতে চাইছে।