আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে “বাধা” শুধু একটাই! কী জানালেন মার্কিন বাণিজ্যসচিব?

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক:- ভারত–আমেরিকা (India-America) বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও ঘনীভূত হল। আমেরিকার (America) বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নয়াদিল্লি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করলে এই চুক্তি এগোনোর সম্ভাবনা নেই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লুটনিক বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি। তবে শর্ত একটাই—রাশিয়া (Russia) থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে হবে।” তাঁর মন্তব্যে প্রতিফলিত হয়েছে যে, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি জ্বালানি নীতি নিয়েও টানাপোড়েন চলছে।

ভারত আমেরিকার মাঝে বাধা কে? (India-America)

তবে এই অচলাবস্থার মাঝেও ওয়াশিংটনের তরফে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “আমার প্রিয় বন্ধু নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আগামী সপ্তাহে কথা বলার অপেক্ষায় আছি। বাণিজ্যিক অচলাবস্থা কাটাতে আলোচনা চলছে। আমি আশাবাদী, এর সফল পরিণতি হবে।” পাল্টা সুরে প্রধানমন্ত্রী মোদীও বন্ধুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন (India-America)। তিনি লিখেছেন, “ভারত ও আমেরিকা শুধু বন্ধু নয়, স্বাভাবিক অংশীদারও। আমাদের আলোচনা সীমাহীন সম্ভাবনার দরজা খুলবে বলে আমি নিশ্চিত।”

আরও পড়ুন: BCCI-এর নতুন সভাপতি হতে চলেছেন সচিন তেন্ডুলকার? কী জানালেন ক্রিকেটের কিংবদন্তি?

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে আমেরিকার চাপ থাকলেও, ভারত–আমেরিকা (India-America) সম্পর্ক আপাতত সৌহার্দ্যপূর্ণ রয়ে গেছে। দুই দেশই সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করতে চাইছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি কিছুটা জটিল। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি করার কারণে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদী চিন সফরে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ নিয়ে ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন, “আমরা ভারত ও রাশিয়াকে চিনের অন্ধকারে হারিয়ে ফেলেছি।” যদিও কিছু সময় পর তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মোদীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং ভারতের সঙ্গে আমেরিকার ‘বিশেষ’ সম্পর্ক রয়েছে।

এমন দোলাচলের পরিস্থিতি নতুন নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে একাধিকবার দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশের উপর হঠাৎ করে চাপানো শুল্ক নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এক পর্যায়ে মার্কিন আদালতে শুনানি পর্যন্ত হয়েছিল যে, ট্রাম্পের একতরফা শুল্ক আরোপ বেআইনি। পরে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছিল, চুক্তিবদ্ধ দেশগুলিকে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে। সেই ধারাবাহিকতায় ভারতের ক্ষেত্রেও কয়েকবার সুর নরম করেছিলেন ট্রাম্প (India-America)।

Uncertainty remains over India-America trade deal.

আরও পড়ুন:-আমেরিকা পাচ্ছেনা পাত্তা? দেশীয় প্রযুক্তিতে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ওড়াতে ফ্রান্সের হাত ধরল ভারত

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত একদিকে যেমন রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি আমদানির সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে, অন্যদিকে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের এই ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হবে না। তবে মোদী–ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য এবং দুই দেশের (India-America)কৌশলগত অংশীদারিত্বই আপাতত আশা জাগাচ্ছে যে আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমাধান মিলবে।