বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার ভারতেই জলের তলায় একসাথে চলবে গাড়ি ও ট্রেন! হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এবার ঠিক এমনই একটি প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। এমতাবস্থায়, সরকারের অনুমোদন পেলেই ব্রহ্মপুত্র (Brahmaputra) নদের নিচে গড়ে উঠতে চলেছে দেশের প্রথম “Underwater Road-Rail Tunnel”। ইতিমধ্যেই অসম সরকার এই টানেল তৈরির জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব জমা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, কেন্দ্রের তরফে এই প্রস্তাবটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এদিকে, ওই টানেলটি তৈরি করা হলে উত্তর অসম, অরুণাচল প্রদেশ এবং তাওয়াং-এর সঙ্গে যোগাযোগ অনেকটাই সহজ হবে। এছাড়াও, দেশের নিরাপত্তার কথাটি মাথায় রেখে ওই টানেল তৈরি করার জন্য অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার রাজি হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ওই এলাকার কাছেই রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ এবং চিনের সীমান্ত। এমতাবস্থায়, সাম্প্রতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়শই লাল ফৌজ এসে ঘাঁট তৈরি করছে সেখানে। শুধু তাই নয়, নিকটবর্তী Jiangsu এলাকার Taihu Lake-র নিচে ইতিমধ্যেই “Under Water Tunnel” বানিয়েছে চিন। তবে, ভারত যে টানেলটি বানানোর পরিকল্পনা করছে তা চিনের ওই টানেলের চেয়েও লম্বা। সর্বোপরি, এই টানেল তৈরি হলে সেখানে সেনা পৌঁছনো আরও সহজ হবে। তাই, এই প্রকল্পে চুড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার আগে সব কিছু ভালো করে দেখে নিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার।
খবর অনুযায়ী, ওই টানেলটি তৈরি করা হবে নগাঁও এলাকা থেকে। সেখানকার কালিবর চা বাগান থেকে সরাসরি জামুগুড়ি পর্যন্ত ওই টানেলটি নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায়, টানেলটি তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। কাজ শুরু করার আড়াই বছরের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ করা হবে বলেও অনুমান করা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই টানেলে রেল এবং সড়কপথ উভয়েই থাকবে।
একেবারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে নির্মিত ওই টানেলটি প্রায় ১০ কিলোমিটার লম্বা হবে। এই টানেল তৈরির দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রক, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক এবং Border Road Organisation (BRO)। এদিকে, এই টানেলটি তৈরি করা হলে এটাই হবে ভারতের প্রথম জলের নিচে থাকা Road Cum Rail Tunnel। উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই এই টানেলের কাজ শুরু করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। টানেলটিতে সেনার কনভয়ের পাশাপাশি ভারী যানবাহনগুলিও ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে বলে জানা গিয়েছে।