বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার আচমকাই শোকের ছায়া নেমে ঊষা উত্থুপের (Usha Uthup) পরিবারে। ৮ জুলাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন গায়িকার স্বামী জানি চাকো। কলকাতায় নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে জানির (Jani Chacko Uthup)। এদিকে স্বামীর প্রয়াণের পর বেশ ভেঙে পড়েছেন ঊষা। দীর্ঘ ৫০ বছরের সম্পর্কে ইতি, এই বিষয়টা মেনে নিতেই বেশ কষ্ট হচ্ছে গায়িকার। সন্তানরা থাকলেও জানিকে হারিয়ে বেশ একা হয়ে পড়েছেন তিনি।
সিনেমাকেও টেক্কা দেয় ঊষা উত্থুপের (Usha Uthup) প্রেম কাহিনী
অনেকেই জানেন না, জানি ঊষার প্রথম স্বামী নন। এর আগেও একবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তবে শহর কলকাতার প্রতি প্রথম থেকেই প্রেম ছিল তাঁর। এই শহরেই জানির সঙ্গে প্রথম আলাপ হয়েছিল গায়িকার। ২০২২ সালে বিকাশ কুমার ঝা-র বই ‘দ্য ক্যুইন অফ ইন্ডিয়ান পপঃ দ্য অথরাইজড বায়োগ্রাফি অফ ঊষা উত্থুপ’ থেকে তাঁর সেই ফিল্মি লাভ স্টোরির (Love Story) কথা জানা যায়।
১৯৬৯ সালে শহর কলকাতার একটি নাইক্লাবে প্রথম আলাপ হয় ঊষা (Usha Uthup) এবং জানির (Jani Chacko Uthup)। তবে গায়িকা সেই সময় বিবাহিত। রামু আইয়ারের সঙ্গে সংসার করছেন তিনি। তখন কলকাতার একটি নাইটক্লাবে গান গাইতেন ঊষা। স্ত্রীয়ের সঙ্গে সেখানে যেতেন রামুও। সেই নাইটক্লাবেই প্রথমবার জানিকে দেখেছিলেন তিনি। বৃষ্টিভেজা এক সন্ধ্যায় জানি এবং রামু দু’জনেই কাছাকাছি টেবিলে বসে তাঁর গান শুনছিলেন। তখনই রামুর সঙ্গে আলাপ হয় জানির। স্বামী একজন সঙ্গী পেয়েছেন দেখে সেদিন মনে মনে বেশ খুশি হয়েছিলেন গায়িকা।
আরও পড়ুনঃ দেখলে হবে খরচা আছে! ‘দাদাগিরি’র জন্য কত পারিশ্রমিক নেন সৌরভ? অঙ্কটা শুনলে ভিরমি খাবেন!
এরপরের দিন রামুকে ওই বারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জানি। তা জেনে বেশ খুশি হয়েছিলেন গায়িকা। তবে গান গাওয়ার সময় আচমকা দেখে রামু নেই, জানি একাই বসে আছেন। এরপর পারফরম্যান্স শেষ করে বাড়ি যাওয়ার সময় জানি তাঁকে পৌঁছে দেওয়ার অফার দেন। গায়িকাও রাজি হয় যান। তবে ফেরার সময় কোনও কথায় হয়নি দু’জনের। এরপর ঊষা (Usha Uthup) বাড়ি পৌঁছনোর পর দরজা খোলেন রামু। তবে জানি দেখেই চটে যান তিনি। আপাত শান্ত স্বভাবের রামু সেদিন জানিকে বাড়ির ভেতর ডাকা তো দূর বরং তাঁর মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেন। স্বামী কেন এমন ব্যবহার করছে? এটা ভাবতে শুরু করেন ঊষা। এরপর রামুকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই জানা যায় আসল কারণ।
রামু বলেন, ‘আজ বিকেলে আমায় জানি কী বলেছে জানো?’ জানি বলেছে, ‘আমি ঊষা এবং ওর মনের কথা জানি না, তবে আমি আপনার স্ত্রীর প্রেমে পড়ে গিয়েছি’। ঊষা জবাবে বলে, ‘ঠিক আছে। উনি তোমায় একথা বলেছে তো কী হয়েছে? আমায় কিছু বলেনি’। রামু তখন পাল্টা জিজ্ঞেস করেন, জানির জন্য ঊষার মনে কোনও অনুভূতি রয়েছে কিনা। জবাবে তখন গায়িকা বলেন, ‘হ্যাঁ’।
স্ত্রীয়ের মুখে একথা শোনামাত্রই রাগে ফুঁসতে থাকেন রামু। দেওয়ালের দিকে প্লেট ছুঁড়ে মারেন তিনি। সেদিন সারারাত কেঁদেছিলেন গায়িকা। এরপর আস্তে আস্তে বাড়তে থাকেন দু’জনের দূরত্ব। অন্যদিকে কাছাকাছি আসতে থাকেন জানি এবং ঊষা। শেষমেষ প্রথম বিয়েতে ইতি টেনে পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন গায়িকা। দীর্ঘ ৫০ বছরের সেই বন্ধনেই এবার ইতি পড়ল। স্বামীকে হারিয়ে বেশ ভেঙে পড়েছেন ঊষা।