বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে নিজেদের ভালো প্রমাণ করতে বিরোধীদের আক্রমণ শানানো নতুন নয়। তবে, বিরোধী দলকে আক্রমণ করতে গিয়ে অনেকেই অনেক সময় সীমা অতিক্রম করে ফেলেন। আর এই কারণে সেই নেতা/নেত্রীকে শাস্তিও ভোগ করতে হয়। এর আগে আমরা এরকম নিদর্শন অনেক পেয়েছি। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীদেরও প্রচার অভিযানে গিয়ে কুকথা বলার জেরে শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে।
কি সেই শাস্তি? বেশি কিছু না, এক, দুই অথবা তিনদিনের জন্য নির্বাচনী প্রচার থেকে অভিযুক্ত নেতা/নেত্রীকে দূরে সরিয়ে রেখে শাস্তি দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে এই শাস্তি দেওয়ার আগে অনেক ভাবেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়। ভিডিওর সত্যতা, কি ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে সেগুলো বিচার করা হয়। এরপর নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা ঠিক করেন যে, অভিযুক্ত নেতা/নেত্রীর দোষ কতটা। আর সেই হিসেবেই ওনার নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে একাধিক নেতা/নেত্রীর বিরুদ্ধে এক অথবা একাধিক দিনের জন্য নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এমনকি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও এও সাজা ভোগ করতে হয়েছিল। ওনার বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন।
পশ্চিমবঙ্গেও নির্বাচনী জনসভা থেকে বেশ কিছু কুরুচিকর মন্তব্য সামনে এসেছে। আর সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হল স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় ওনারই করা কিছু মন্তব্য। আর সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কমিশনে গিয়েছে বিজেপি। এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সভার ভিডিও কমিশনের কাছে জমা করা হয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুরের একটি নির্বাচনী সভায় গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন। সেই আক্রমণ সমস্ত সীমা পার করেছে বলে অভিযোগ করেছিল বিজেপি। আর সেই সভার ভিডিও এখন কমিশন খতিয়ে দেখছে।
কি বলেছিলেন মমতা? পূর্ব মেদিনীপুরের ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার অপদার্থ, দুর্নীতিবাজ, দাঙ্গাবাজ সরকার। বিজেপি দাঙ্গা আর লুঠ ছাড়া কিছুই করতে পারে না। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে রাজ্যের মা-বোনেরা আর নিরাপদে থাকবে না। আমরা দাঙ্গা চাই না, মোদীর মুখও দেখতে চাই না।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জানিয়েছে বিজেপি। তাঁদের দাবি দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্য নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।
বিজেপির এই অভিযোগের পর প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। আর কমিশনের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের ডিজি সেই সভার ভিডিও জমা দিয়েছেন। সুত্রের খবর অনুযায়ী, এই ভিডিও কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনে পেশ করা হবে। তবে এখনও জানা যায়নি, ভিডিওতে আপত্তিকর কিছু পাওয়া গেলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে কি না।