বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে চলা তর্কের মধ্যেই ঝারখন্ডের কোডরমা জেলার একটি গ্রাম বর্তমানে চরম চর্চায় উঠে এসেছে। কোডরমার নাদকরী উপরি টোলা এমন একটি গ্রাম, যেখানে মোট ৮০০ জন বসবাস করে। আর তাঁরা সবাই একই পরিবারের। এই অবাক করা কাহিনী উত্তিম মিঞা নামের এক ব্যক্তির, যিনি ১৯০৫ সালে কাজের সন্ধানে নিজের স্ত্রী আর বাবা বাবর আলির সঙ্গে কোডরমা পৌঁছেছিলেন। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে একটি নির্জন এলাকায় পৌঁছনর পর তাঁরা সেখানেই নিজেদের আশ্রয় স্থল বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
উত্তিম মিঞা নিজের পরিবারের সঙ্গে জঙ্গল পরিস্কার করে চাষের উপযোগী জমি বানায় আর সেখানেই একটি ঝুপড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করে। এরপর উত্তিম মিঞার পরিবারের সদস্যের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে তাঁরা ২ থেকে ৫ হয় আর ৫ থেকে সদস্যের সংখ্যা বেড়ে ৮২ হয়। আর আজ ১১৬ বছর পর পরিবারের সদস্য বেড়ে ৮০০ হয়ে গিয়েছে।
কোডরমায় থাকাকালীন উত্তিম মিঞার ৫টি ছেলে হয়। এই প্রসঙ্গে কথা বলার সময় উত্তিম মিঞার নাতি ৮২ বছর বয়সী হাকিম আনসারি বলেন, উত্তিম মিঞার পাঁচ পুত্র মহম্মদ মিঞা, ইব্রাহিম মিঞা, হানিফ আনসারি, করীম বখশ, আর সাদিক মিঞার মোট ২৬টি ছেলে আর ১৩টি মেয়ে ছিল।
হাকিম জানান, প্রথমের দিকে নিজ পরিবারের ভাই-বোনদের মধ্যে বিয়ে হত। এরপর তাঁদের পরিবারে ৭৩টি ছেলে জন্ম নেয়। ১১৬ বছর আগে উত্তিম মিঞা দ্বারা বসানো এই গ্রামটিকে আজ নাদকরী উপরি টোলা নামা জানা যায়। ওই গ্রামে বর্তমানে ৮০০-র বেশী সদস্য রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৪০০ জনের নাম ভোটার লিস্টে রয়েছে।
উত্তিম মিঞার আরেক নাতি ৭০ বছরের মইনুদ্দিন বলেন, গ্রামে প্রধান আয়ের উৎস হল চাষবাস। চাষ করেই এই গ্রামের সবাই জীবনযাপন করে। তিনি জানান, পরিবারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পর অনেকেই আবার গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাঁরা শহরে গিয়ে জীবনযাপন করছে।
মইনুদ্দিনের মতে আপাতত গ্রামে তাঁদের পরিবারের ৮০০ জনের বেশী মানুষ বসবাস করে। তিনি বলেন, এখন তাঁদের পরিবারের মেয়েদের গ্রামের বাইরেও বিয়ে হচ্ছে। আপাতত এই গ্রামে দুটি মসজিদ, মাদ্রাসা আর স্কুল রয়েছে। এছাড়াও অনেক সরকারি প্রকল্পের সুবিধান পাচ্ছে তাঁরা।