বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিনকয়েক থেকে খবরের শিরোনামে নোবেলজয়ী আর বিশ্বভারতী। জমিজট থেকে শুরু করে নোবেলজয়, সব নিয়েই চলছে তুমুল বিতর্ক। সম্প্রতি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amrtya Sen) পাশে দাঁড়িয়ে বিতর্ক জড়িয়েছেন রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীও। এবার সেইমতই অমর্ত্য সেনের পর বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati) নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে আসা বিশ্বভারতীর একটি বিবৃতি নিয়েই আরও জোরদার হল বিতর্ক।
এদিন বিশ্বভারতীর বিবৃতিতে বেনজির ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোকে। বলা হয়েছে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন।’’ শুধুই কী তাই, পাশাপাশি ‘স্তাবকেরা’ যা বলেন, মাননীয়া তাই বিশ্বাস করেন এবং টিপ্পনিও করেন— এমন কথারও উল্লেখ রয়েছে সেই বিবৃতিতে। যেখানে একদিকে ক্রমশ্য চড়ছিল বিশ্বভারতী বিতর্কের পারদ, সেখানে বুধবারের এই বিবৃতি অন্যমাত্রা যোগ করল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বভারতীর উপর মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ না থাকলেও তাদের কোনো অসুবিধা নেই। কারণ, কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথে চলবেন। ওই বিবৃতির নীচে স্বাক্ষর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার এই বিবৃতি সামনে আসতেই শোরগোল পরে গিয়েছে সর্বত্র। বিবৃতির তীব্র নিন্দা করে তৃণমূল মুখপাত্র তাপস রায়ের মন্তব্য, “এটা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিবৃতি হতে পারে না, মনে হচ্ছে রাজনৈতিক দলের বিবৃতি।”
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে বীরভূম সফরে গিয়েছিলেন মমতা, সেখানে বিশ্বভারতীর আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘যদি কেউ মনে করেন, পড়ুয়া-অধ্যাপক ও কর্মচারিবৃন্দকে ক্ষমতার জোরে মেরুকরণ, গৈরিকীকরণ করবার জন্য তাঁদের বুলডোজ় করবেন, তা হলে একটা লোকও যদি ওঁদের সঙ্গে না-থাকে আমি আছি।’’
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করল বিশ্বভারতী। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্বভারতীতে এখন ৪৭৩ জন শিক্ষক, প্রায় ১৫ হাজার ছাত্রছাত্রী এবং ৭৫০ জন কর্মচারী বন্ধু আছে। তার মধ্যে এক জন শিক্ষক এবং ছয় জন ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য শুনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণ করলেন। এটা অস্বাভাবিক নয়।”
পাশাপাশি আরও বলা হয়, “মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন। যে অধ্যাপক সম্পর্কে বললেন যে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে, এটা সর্বৈব ভুল। তাঁকে শাস্তির প্রস্তাব এবং এই প্রস্তাবটা নিয়ে ওই অধ্যাপক মামলা করেছেন। অতএব ব্যাপারটা বিচারাধীন। মাননীয় কোর্ট কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি। অতএব মুখ্যমন্ত্রী একটু বাড়াবাড়ি করলেন না কি?’’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বভারতী নিয়ে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে সেখানে। বিবৃতিতে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরু পাচার, এই সমস্ত বিষয় তুলেই বেনজির আক্রমন করা হয়েছে রাজ্যকে।