বাংলাহান্ট ডেস্ক: হায়দ্রাবাদের তরুণ উদ্যোক্তা বিশ্বনাথ অকুথোটার সাফল্যের গল্প (Success Story) শুধু একটি স্টার্টআপের উত্থান নয়, বরং এক প্রজন্মের ত্যাগ, স্বপ্ন এবং উদ্ভাবনের সম্মিলিত ফল। ‘ড. পিন্যাকল’-এর প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বনাথ বর্তমানে এআই ও সাইবার সিকিউরিটির অন্যতম শীর্ষ উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত। মাত্র ১ লক্ষ টাকার মূলধন নিয়ে শুরু হওয়া তাঁর এই স্টার্টআপ আজ কোনও বাহ্যিক ফান্ডিং ছাড়াই বছরে প্রায় ৬০–৬৫ লক্ষ টাকা আয় করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার নিরাপত্তা ও অডিটিংয়ে অসাধারণ দক্ষতার জন্য তাঁকে অনেকে ‘এআই-এর ডাক্তার’ বলেও অভিহিত করেন।
বিশ্বনাথের অসাধারণ সফলতার কাহিনি (Success Story):
বিশ্বনাথের শৈশব কেটেছে তেলেঙ্গানার একটি ছোট জেলার সাধারণ পরিবেশে। তাঁর বাবা ছিলেন বিএসএনএল–এর কর্মী এবং পরিবার ভাড়া বাড়ির আয় দিয়ে সংসার সামলাতো। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল তাঁর। ২০১৪ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় পড়তে যাওয়ার সুযোগ পান তিনি। তবে সেই স্বপ্ন পূরণ সহজ ছিল না—বিশ্বনাথের দাদু নাতির পড়ার খরচ জোগাতে পরিবারের বাড়ি পর্যন্ত বন্ধক রাখেন। এই ত্যাগই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে, যা পরবর্তীতে তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে (Success Story)।
আরও পড়ুন: পুতিনের পর এবার ভারত সফরের জন্য প্রস্তুত জেলেনস্কি! কবে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট?
আমেরিকায় দীর্ঘ কয়েক বছর কাজ করে বিশ্বনাথ বছরে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বেশি আয় করতেন। তবে আর্থিক সাফল্য (Success Story) সত্ত্বেও তিনি বুঝতে পারেন যে শুধু বড় বেতনের চাকরি তাঁর লক্ষ্য নয়। তিনি অনুভব করেন, তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের উপকারে লাগতে পারে। এই উপলব্ধিই তাঁকে দেশে ফিরে আসার সাহস দেয় এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও নিরাপদ, স্বচ্ছ ও নৈতিক করে তুলতে ‘ড. পিন্যাকল’-এর সূচনা করেন। এআই সিস্টেম অডিট, রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং সাইবার সিকিউরিটির বিষয়ে পরামর্শ দেওয়াই এই কোম্পানির প্রধান কাজ।
বর্তমানে ‘ড. পিন্যাকল’-এর দলে রয়েছে প্রায় ৬–১০ জন সদস্য এবং কোম্পানি সক্রিয়ভাবে আটটি বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। নিয়মিত গ্রাহকের সম্পর্ক এবং বিশ্বাসযোগ্য পরিষেবা তাঁদের ব্যবসাকে স্থায়িত্ব দিয়েছে। আজ বিশ্বনাথ বিশ্বের নানা প্রান্তের বড় বড় কর্পোরেট, এমনকি ফর্চুন ৫০০ কোম্পানিরও বিশ্বস্ত এআই ও সাইবার সিকিউরিটি উপদেষ্টা। তাঁর দক্ষতা এবং নির্ভরযোগ্যতার কারণে আন্তর্জাতিক মহলে তিনি অন্যতম উচ্চপারিশ্রমিক পাওয়া এআই উপদেষ্টাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন (Success Story)।

আরও পড়ুন: ডোনাল্ড ট্রাম্প এভিনিউ! ভারতের এই শহরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামে হচ্ছে রাস্তা, কেন এমন সিদ্ধান্ত?
আগামী দিনে বিশ্বনাথ তাঁর প্রতিষ্ঠানের পরিধি ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে আরও বিস্তৃত করতে চান। তাঁর মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যত বেশি শিল্পক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, ততই বাড়বে এআই গভর্ন্যান্স ও সাইবার নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা। এই শূন্যস্থান পূরণ করাই ‘ড. পিন্যাকল’-এর লক্ষ্য। তেলেঙ্গানার সাধারণ পরিবারের এক যুবকের এই দৃঢ়তা ও সাফল্য (Success Story) আজ ভারতের নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।












