বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিন থেকে প্রত্যাবর্তনের আগে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) ভারতের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, ভারত অর্থনৈতিক দিক থেকে মহাশক্তিশালী দেশ। বহুমেরু বিশ্বে কারোর কোনও আধিপত্য নেই। অর্থাৎ, সকলের সমান অধিকার রয়েছে। পুতিন বলেন, ব্রিকসের মতো ফোরাম আধিপত্যের রাজনীতি অনুশীলন করে না। সেখানে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভারত এবং চিনের মতো বৃহৎ দেশগুলিও এর সদস্য। তবুও, আলোচনা কখনোই আধিপত্যবাদ নিয়ে হয় না।
কী জানিয়েছেন পুতিন (Vladimir Putin)?
এদিকে, পুতিনের (Vladimir Putin) এই বিবৃতিটি এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন ভারত ও আমেরিকার মধ্যে শুল্ক যুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প সরকার ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনছে। তাছাড়া, ক্রোধের বশে ট্রাম্প ভারতের অর্থনীতিকে “মৃত” বলেও অভিহিত করেছিলেন।
🚨🇷🇺 ‘YOU CANNOT TALK TO INDIA OR CHINA LIKE THAT:’ Putin on economic pressure against partners
“Attempting to weaken their leadership, built through difficult histories, is a mistake.” pic.twitter.com/GsiU3K3mnZ
— Sputnik India (@Sputnik_India) September 3, 2025
এদিকে, পুতিন (Vladimir Putin) স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, কোনও দেশেরই বিশ্ব রাজনীতি এবং নিরাপত্তার ওপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করা উচিত নয়। পুতিন ভারত ও চিনের মতো দেশগুলিকে অর্থনৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, সকল দেশেরই সমান অধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০০০০০০০০০০০০ টাকার বড় পদক্ষেপ! Jio-র পর দেশের প্রতিটি বাড়িতে বিশেষ প্রযুক্তি পৌঁছতে চান আম্বানি
“এই সুরে কথা বলতে পারেন না”: পুতিন (Vladimir Putin) বলেন, বড় দেশগুলির নিজস্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং দেশীয় আইন রয়েছে। যদি কেউ তাদের “শাস্তি” দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের নেতাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, “যদি তাদের কেউ দুর্বল বলে মনে হয়, তাহলে তার রাজনৈতিক করিয়ার শেষ হয়ে যাবে।” পুতিন পশ্চিমীদের তাদের ঔপনিবেশিক ইতিহাসের কথাও মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন যে, “এখন ঔপনিবেশিক যুগ শেষ হয়ে গেছে। তাই পশ্চিমী দেশগুলিকে তাদের অংশীদারদের সঙ্গে আদেশের সুরে কথা বলা বন্ধ করতে হবে।”
“জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত, কিন্তু…”: চিনে পুতিন (Vladimir Putin) জানিয়েছেন যে, তিনি ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করার সম্ভাবনা কখনোই উড়িয়ে দেননি। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ধরণের কথোপকথনের কোনও অর্থ আছে কিনা তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। পুতিন বলেন, কিয়েভ এবং পশ্চিমীরা যদি বাস্তববাদী মনোভাব গ্রহণ করে তবে সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি নূন্যতম সচেতনতা দেখানো না হয়, তাহলে রাশিয়া সামরিক উপায়ে তার লক্ষ্য অর্জন করবে। পুতিন ইউক্রেনের বর্তমান নেতৃত্ব এবং সংবিধানকে “দুর্বলতা” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন: পাত্তাই পাচ্ছেন না ট্রাম্প! ভারতের অর্থনীতিতে ভরসা রেখে বড় ঘোষণা করল আমেরিকার বৃহত্তম ব্যাঙ্ক
আমেরিকা ক্রমাগত ভারতকে “টার্গেট” করে চলেছে: এদিকে, ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ক্রমাগত ভারতকে “টার্গেট” করে চলেছেন। তিনি SCO শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়া ও চিনের নেতৃত্বদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠককে “লজ্জাজনক” বলে অভিহিত করে বলেন, “এটা লজ্জাজনক যে মোদী শি জিনপিং এবং পুতিনের (Vladimir Putin) পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। আমরা আশা করি তিনি বুঝতে পারবেন যে ভারতের আমাদের সঙ্গে থাকা উচিত, রাশিয়ার সঙ্গে নয়।”
এদিকে, নাভারো রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে পুতিনের (Vladimir Putin) যুদ্ধ মেশিনে ফান্ডিং করার অভিযোগও ভারতের বিরুদ্ধে তোলেন। কিন্তু, ভারত আমেরিকান অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে তেল আমদানি তার জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, ভারত বলেছে যে মার্কিন শুল্ক “অনুচিত”। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারতই একমাত্র দেশ নয় যে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। চিনও ব্যাপকভাবে অপরিশোধিত তেল কিনছে। তবুও ট্রাম্পের “সেকেন্ডারি ট্যারিফ”-এর সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ছিল কেবল ভারত। পুতিন ইউরোপ সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, EU-র বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলি মন্দার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলি দ্রুত অগ্রগতি করছে। তিনি চিনের সঙ্গে তার আলোচনাকে “কার্যকর এবং ইতিবাচক” বলেও বর্ণনা করেছেন।