বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে খড়্গপুরে ‘উৎকর্ষ বাংলা’র অনুষ্ঠানে গিয়ে কচুরিপানা দিয়ে কিভাবে ব্যাগ ও থালা তৈরি হচ্ছে সেকথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বলেছিলেন, কচুরিপানাকে সুন্দরভাবে শুকিয়ে, তা দিয়ে ব্যাগ, বাজারের থলি, খাবারের থালা তৈরি করা যেতে পারে। অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়েই কাশফুলের লেপ-বালিশের কথাও শুনিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় এক বছর। আর এবার বাংলাকে একটা আস্ত একটা ‘কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র’ (Water Hyacinth or Kachuripana Industry) উপহার দিতে চলেছে সরকার। এই শিল্পকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলাকে। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে ইতিমধ্যেই নাকি সেই কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলার তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, পূর্বস্থলী-১ ব্লকের সমুদ্রগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তুলসীডাঙাতে গড়ে উঠবে এই ‘কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র’। শিল্পকেন্দ্র তৈরির জন্য শুক্রবার সেই জমি দেখতে যান খাদি বোর্ডের আধিকারিক মানস গোস্বামী সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিকদের একটি বিশেষ দল। গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন তারা।
আরও পড়ুন: ‘পারলে… আসুন’, এবার রাজ্যপালকে ‘বিরাট’ চ্যালেঞ্জ মমতার! মানবেন সিভি আনন্দ বোস?
এই শিল্প গড়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে শিল্পকেন্দ্রের জন্য ৪৮ লাখ টাকা অনুমোদনও করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অনুমোদনের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ক্যাবিনেটের অন্যতম সদস্য স্বপন দেবনাথ।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে ‘বিরাট’ জয় পেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন! মুখে হাসি রাজীব সিনহার
ঠিক কি বলেছেন তিনি? স্বপনবাবুর কথায়, “এখানে একটি কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সরকারকে জমি দান করা হয়েছিল। তারপর সরকার অর্থ মঞ্জুর করেছে। প্রথমে এখানে প্রশিক্ষণ হবে। তারপর কাঁচামাল রাখার জায়গা, প্রোডাকশন, বিপণন কেন্দ্র পুরোটাই তৈরী হবে।’ পাশাপাশি চলতি বছরের ডিসেম্বরেই এই শিল্পকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
গত বছর এই নিয়ে কি বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? সেই সময় মমতা বলেন, “আজ গ্রামে গ্রামে অনেক কিছু হতে পারে। আমার মামার বাড়ি গ্রামে। সেখানে যখন যেতাম দেখতাম পাকের মধ্যে পড়ে থাকে ওই কচুরিপাতা যা দিয়ে মাদুরও তৈরি হয়। আপনারা কি জানেন কচুরিপানা দিয়ে এত সুন্দরভাবে সেটাকে শুকিয়ে ব্যাগ তৈরি করছে, খাবারের থালা তৈরি করছে। আগে শালপাতার থালাতে খাবার দিত। এখন এই নতুন থালাতে খাবার দিচ্ছে। ভাবতে পারেন? কচুরিপানা দিয়ে যে এত ভাল কাজ হতে পারে ভাবা যায় না।” এবার মমতার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে। অপেক্ষা মাত্র কিছুদিনের।