বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিচারপতির এক ধমকেই হল কাজ। সোমবার দুপুরে হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলে। আদালতের নির্দেশের পরও অঙ্কিতার থেকে পাওয়া ববিতা সরকারের চাকরি কেন অনামিকা রায়কে (Anamika Roy) দেওয়া হয়নি সেই নিয়ে পর্ষদকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন বিচারপতি। আর এই ঘটনার কিছু ঘন্টা পরই হল কাজ।
সূত্রের খবর সোমবারই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিলিগুড়ির অনামিকার চাকরির কথা জানিয়েছে। পর্ষদ কর্তৃক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনামিকা সাহার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে তাকে পর্ষদে পৌঁছে যেতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর থেকে চাকরি দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) তোলপাড় রাজ্য। বলতে গেলে ওলটপালট বাংলা। মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর (Ankita Adhikari) চাকরি দিয়ে শুরু। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ববিতা। ওদিকে একবছর হতে না হতেই তার চাকরি কেড়ে নেয় শিলিগুড়ির অনামিকা রায়।
অ্যাকাডেমিক স্কোরে ভুলের জেরে চাকরি চলে যায় ববিতার। শিলিগুড়ির অনামিকার অভিযোগ ছিল নিজের আবেদনপত্রে অ্যাকাডেমিক স্কোর ভুল লিখেছিলেন ববিতা, আর তার জেরেই মিলেছিল শিক্ষকের চাকরি। ভুলবশত দেওয়া বাড়তি ২ নম্বর প্রত্যাহার করা হলে ববিতার চাকরি প্রকৃতপক্ষে পাওয়ার কথা অনামিকার। শুরু হয় আইনি লড়াই।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি দানব! আজ থেকেই ঘোর বিপর্যয়, ঝড়-জল বাড়বে দক্ষিণে, ৯ জেলায় তুমুল সতর্কতা
এরপর কলকাতা হাইকোর্ট সব বিবেচনা করে অনামিকাকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওদিকে চাকরি থেকে বেতন হিসেবে পাওয়া টাকারও হাতবদল হতে থাকে। প্রথমে অঙ্কিতার চাকরিকালীন পাওয়া সমস্ত বেতনের দুই কিস্তিতে ববিতা সরকারকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷
এরপর আবার হাইকোর্টের রায় পরিবর্তন হলে মন্ত্রী কন্যার বেতন বাবদ নেওয়া ১৫.৯২ লক্ষ টাকা পান জলপাইগুড়ির অনামিকা। তবে টাকা পেলেও এতদিন তিনি চাকরি পাননি। হাইকোর্টের নির্দেশের পরও পর্ষদ তরফে মেলেনি নিয়োগপত্র। অনামিকাকে তার বাড়ির ১৫ থেকে ২০ কিমি দূরত্বের মধ্যে কোন স্কুলে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক পদে কাকে চাকরির সুপারিশ পত্র দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর জুন মাসে চাকরির সুপারিশ পত্র দেয় এসএসসি।
আরও পড়ুন: ‘আমার অবসরের জন্য অনেকে অপেক্ষা করছে’, ভরা এজলাসে কাদের নাম নিলেন বিচারপতি?
নিয়মমাফিক মেডিক্যাল এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলেও চাকরি হয়নি তার। সোমবার এই নিয়েই পর্ষদের ওপর রাগে ফেটে পড়েন বিচারপতি। এজলাসে বিচারপতি এও বলেন, “কেন চাকরি আটকে থাকবে? উনি কি সন্ত্রাসবাদী?” প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, “কেন ভেরিফিকেশন হয়নি? কোন থানা ছিল দায়িত্বে?’’
এরপরই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটকে আজ দুপুর ৩টের মধ্যে এই বিষয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তবে আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ে গতকালই অনামিকার চাকরির ঘোষণা করেছে পর্ষদ।