বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই শীতের ব্যাটিং শুরু হয়েছে রাজ্যে। পাশাপাশি, পারদের স্তরও ক্রমশ নিম্নমুখী। এমতাবস্থায়, এই মরশুম সামনে আসতেই “শীত স্পেশাল” বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের অপেক্ষায় থাকেন ভোজন রসিক বাঙালি। যে তালিকায় এক্কেবারে উপরের দিকে থাকে জয়নগরের সুবিখ্যাত মোয়া (Jaynagarer Moa)। সমগ্ৰ রাজ্যজুড়েই এই মোয়ার বিরাট কদর পরিলক্ষিত হয়। যদিও, চলতি বছরে শীতের মরশুম শুরু হতে না হতেই এক দুঃসংবাদ সামনে এলো।
জানা গিয়েছে, এবার রীতিমতো বন্ধ হতে চলেছে জয়নগরের মোয়া ব্যবসা। আর তার পেছনে রয়েছে এক বিশেষ কারণও। মূলত, মোয়া তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল নলেন গুড়। এদিকে, নলেন গুড় আবার তৈরি হয় খেজুরের রস থেকে। শীতের মরশুম এলেই খেজুরের রস ফুটিয়ে নলেন গুড়ের প্রস্তুতি শুরু হয় জোরকদমে। আর এই কাজে পরিশ্রম এবং ঝুঁকিও থাকে অনেক। এমতাবস্থায়, কঠোর পরিশ্রমের পরেও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। যার জেরে মোয়া উৎপাদনেও প্রভাব পড়েছে।
শুধু তাই নয়, সঠিকভাবে উপার্জন না হওয়ায় এই ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলী, বাসন্তী, গোসাবা এবং জয়নগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ব্যবসায়ীরা। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, খেজুর গাছে রস সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় অভিজ্ঞতার। নাহলে খেজুর গাছের যে কাঁটা রয়েছে সেই কাঁটা হাতে ও পায়ে ঢুকে গিয়ে জখম হতে পারেন রস সংগ্রহকারীরা। এমনকি, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য আবার খেজুর গাছ থেকে খুব একটা বেশি রসও পাওয়া যাচ্ছে না এখন।
এমতাবস্থায়, মাত্র তিন মাসের এই ব্যবসায় একাধিক ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকা সত্বেও লাভ সেই অর্থে নেই। আর এই কারণকে সামনে রেখেই নতুন করে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছে না কেউই। এমনকি, খেজুর গাছের রস সংগ্রহ থেকে বিরত থাকছে আগামী প্রজন্মও। যার ফলে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়েছে মোয়ার ভবিষ্যত। এমনকি, আগামী সময়ে এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে এক খেজুর রস সংগ্রহকারী সামগ্রিক সমস্যাটির বিষয়টি উপস্থাপিত করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে খেজুর গাছে খুব একটা বেশি রসের দেখা মিলছে না। যার ফলে এই ব্যবসায় আগের মত লাভও হচ্ছে না। যে কারণে সারাদিনের হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পরেও মিলছে না লাভ। এই কারণেই এই ব্যবসা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন অধিকাংশজন।