কিনতে গিয়েছিলেন সেক্সডল, প্রতারণায় ৩৭ লক্ষ টাকা খোয়ালেন রাজগঞ্জের শিক্ষক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: অনেকটা ফিল্মি কায়দায় ধরা দিলেন তিনি! রাত প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ শিলিগুড়ির এক পানশালায় আচমকাই ঢুকে পড়ল পুলিশের একটি দল। রাজগঞ্জ থানার এসআই মহম্মদ মনসুরউদ্দিনের নেতৃত্বে থাকা সেই দলের তাড়ায় দৌড়ে পালাচ্ছেন ওই পানশালার মালিক। শেষে ধরাও পড়লেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই, আচমকা এই ঘটনায় অবাক হয়েছেন সকলেই।

কিন্তু, কেন ধরা হল তাঁকে? তার পেছনে রয়েছে অদ্ভুত এক কারণ! প্রায় বছর দেড়েক আগে শিলিগুড়ির অতি পরিচিত হংকং মার্কেটের একটি দোকান থেকে সেক্সডল কিনতে যান রাজগঞ্জের বেলাকোবার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। পুতুলটি কেনার জন্য ১ লক্ষ টাকায় দরদাম করে বেশ কয়েক হাজার টাকা আগাম দিয়েও দেন তিনি।

ওই শিক্ষকের বাড়িতে পুতুলটি পৌঁছে দিলে বাকি টাকা দিয়ে দেওয়ার কথা হয়। কিন্তু, ঐখানেই ছিল মস্ত ফাঁদ! নিজের অজান্তেই বিরাট একটি প্রতারণা চক্রে পা দিয়ে ফেলেন ওই শিক্ষক। এদিকে, কিছুদিন পরই তাঁকে জানানো হয় যে, পুতুলটি ডেলিভারি দিতে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গিয়েছে ডেলিভারম্যান।

এখানেই শেষ নয়, জাকির হুসেন নামে আমবাড়ি থানার পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে ওই শিক্ষককে গ্রেফতারের ভয়ও দেখানো হয়। তবে, ২ লক্ষ টাকা দিলে তিনি গ্রেফতারি এড়াতে পারবেন বলেও জানানো হয়। কথামতো তাদের ২ লক্ষ টাকা দিলেও মেটেনি ঝামেলা। বরং, ভয় দেখিয়ে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৭ লক্ষ টাকা তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক।

05 Arrest
অভিযুক্ত

এমনকি, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পরিচয় দিয়েও টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয় তাঁর কাছ থেকে। শেষমেশ গতবছরের নভেম্বর মাসে রাজগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষক। তারই ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, ওই বিপুল পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে শিলিগুড়ির কসমস মলের ডান্সবারের মালিক পবন দাস, তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা দাস এবং পাপন দাস ও প্রকাশ পাল এই চারজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

তারপর থেকেই জোর তল্লাশির পর খোঁজ মেলে পবনের। শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এক্কেবারে ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, বাকিদের খোঁজে এখনও তল্লাশি জারি রয়েছে

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর