বাংলা হান্ট ডেস্ক: মূলত বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে কল্পনার রং মিশিয়েই বানানো হয় সিনেমা। কিন্তু, কখনও কখনও “রিল লাইফ”-কেও ছাপিয়ে যায়, রিয়েল লাইফের ঘটনা! আর তাতেই স্বাভাবিকভাবে অবাক হয়ে যান সকলেই। ঠিক সেইরকমই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা। পুরো ঘটনাটিই ঠিক যেন সাতের দশকে “ঠগিনী” সিনেমার কথা মনে করিয়ে দিল সবাইকে। বিয়ের পর সর্বস্ব লুঠের ছক ফাঁস হয়ে যেতেই গ্রেফতার হলেন নববধূ।
ঠিক কি ঘটেছে?
প্রাথমিকভাবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেয়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত পালের বিবাহের জন্যে বেশ কিছুদিন ধরেই পরিবারের সদস্যরা মেয়ে খুঁজছিলেন। এমতাবস্থায়, এক ঘটক চলতি মাসের ২০ তারিখে রাখি বিশ্বাস নামের ওই “প্রতারক” মহিলাকে নিয়ে আসেন সঞ্জিতের বাড়িতে। পাশাপাশি, তাঁর সঙ্গে ছিলেন শান্তি বিশ্বাস নামের আরও এক মহিলা।
সেখানেই ওই পাত্রী সম্পর্কে ঘটক জানিয়েছিলেন যে, ওই মেয়েটির মা নেই এবং বাবা মানসিক রোগী। এমতাবস্থায়, মেয়েটির দুর্দশার কথা শুনে সকলেই পছন্দ করে নেন তাঁকে। শুধু তাই নয়, ওই দিনই বিয়ের ব্যবস্থা করেন পরিবারের সদস্যরা। এক্কেবারে সমস্ত নিয়ম মেনেই বিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের।
পাশাপাশি, গত রবিবার প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করে বৌভাতের আয়োজনও করা হয়। যদিও, বিয়ের পরেই ওই নববধূর আচরণ সন্দেহজনক মনে হয় সকলের কাছেই। এমনকি, হঠাৎ করেই গত বৃহস্পতিবার তিনি চাকদায় ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা বলেন। শুধু তাই নয়, বিয়ের সমস্ত গয়নাও সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। আর তাতেই ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে সবকিছু।
এমতাবস্থায়, সঞ্জিত জানতে পারেন যে, এর আগেও রাখির একাধিকবার বিয়ে হয়েছে। এদিকে, এই কথা জানতে পেরে স্বাভাবিকভাবেই আকাশ থেকে পড়েন সকলে। এই প্রসঙ্গে সঞ্জিত জানিয়েছেন, “রাখির অন্য একটা ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। এছাড়াও, এর আগেও একাধিক জায়গায় ওর বিয়ে হয়েছে। অসহায় মেয়ে ভেবে ওকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু, এখন সে আমাদের ঠকিয়েছে।”
এদিকে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সঞ্জিতের পরিবার বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পাশাপাশি, অভিযোগ পেয়ে গত শুক্রবার রাখিকে গ্রেফতার করে বাগদা থানার পুলিশ। বিয়ের ছলনায় সর্বস্ব লুঠ করতে এসে শেষ পর্যন্ত জেলে ঠাঁই হয়েছে ওই মহিলার।