বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। প্রশাসনিক দক্ষতায় চালান পশ্চিমবাংলাকে। কলেজ জীবনে রাজনীতির আঙ্গিনায় পা রাখার পর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বার্ধক্যের দোরগোড়ায় পৌঁছেও প্রতিমুহূর্তে লড়াই করে চলেছেন। রাজনৈতিক জীবন থেকে শুরু করে ব্যক্তিজীবনে তার অদম্য জেদ, লড়াকু মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অতি বড় বিরোধীও। শুধু বাংলা নয়, বাংলার বাইরেও প্রতি মুহূর্তে তিনি মন জয় করে চলেছেন। হয়ে উঠেছেন একেবারে ঘরের মেয়ে।
সেই আমজনতার ঘরের মেয়েই এবার নিজে মুখে তুলে ধরলেন তার ছোটবেলার কথা। প্রবল অভাব অনটনের মধ্যেও ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া নানান মজার ঘটনা থেকেই যে নিজের শখ আহ্লাদ মেটানোর বন্দোবস্ত করতেন সেকথা পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠকের সেকথা নিজের মুখে স্বীকার করলেন।
তৃণমূল সুপ্রিমো ছেলেবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, তিনি নিজের হাতেই তার গ্রামের বাড়িতে ধানের বীজ বুনতেন। এমনকি, খুব যত্ন করে ধান কাটার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আসলে দুর্গাপুরের বৈঠক থেকে প্রশাসনিক স্তরে কিভাবে জনসংযোগ আরো বাড়ানো যায় সেই বিষয়েই বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের পাশে থেকে তাদের কাজে হাত লাগানোর কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, জনসংযোগ বাড়াতে ধান কাটারও পরামর্শ দেন তিনি। আর ধান কাটার প্রসঙ্গ উঠতেই সরাসরি বিধায়কদের কাছে জানতে চান, ‘কোন কোন বিধায়ক ধান কাটতে পারেন। একটু হাত তুলুন তো দেখি৷ অবশ্য পূর্ব বর্ধমান জেলার অনেকেই পারবেন, আমি জানি৷’ এরপরই নিজে কিভাবে ধান কাটা শিখলেন সেই তথ্যও তুলে ধরেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তোমরা হয়তো ভাববে আমি কলকাতায় থেকেও কীভাবে শিখলাম? আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই তো গ্রামে একটা বাড়ি আছে৷ আমরাও ছোটবেলায় মামাবাড়ি আসতাম৷ তখন দেখতাম চাষিরা সব ধান কাটত না৷ তখন আমরা সেগুলো কুড়িয়ে রাখতাম৷’ শুধু তাই নয়, এরপর মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘গ্রামে যাঁরা আলুর চপ, চুড়ি বিক্রি করতে আসতেন, তাঁদেরকে ওই ধান দিয়ে তার বিনিময়ে জিনিস নিতাম৷ আগে তো গ্রামে ধান, মুড়ি দিয়ে জিনিস পাওয়া যেত৷’ এখনও সেই প্রথা চালু আছে কী না সেই সম্পর্কেও জানতে চান নেত্রী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই দলের কর্মীদেরকে জনসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন। এবার ফের বর্ধমানের বৈঠক থেকে গ্রামাঞ্চলে মানুষের সুবিধা- অসুবিধা জানতে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিশে যাওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।