বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের নানান সমস্যা ও তাদের উপর হওয়া অত্যাচার বন্ধ করতে তাদের নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির জন্য নতুন পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। শ্রম দপ্তর সূত্রে খবর, এবার থেকে রাজ্যের সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক পাবেন ‘সচিত্র পরিচয়পত্র’। জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে ইতিমধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের ‘কর্মসাথী’ পোর্টালের মাধ্যমে রাজ্যের শ্রমিকরা এই পরিচয় পত্র সংগ্রহ করতে পারবে।
‘কর্মসাথী’ পোর্টাল থেকে সংগ্রহ করা যাবে পরিচয়পত্রটি , জানল রাজ্য সরকার (West Bengal Government)
রাজ্য সরকার সূত্রে জানান হয়েছে, রাজ্যের ‘কর্মসাথী’ পোর্টাল শুধুমাত্র পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট। শ্রমিকরা এই পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। পরিচয়পত্রে থাকবে শ্রমিকের ছবি, নাম, ঠিকানা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে কার্ডের নকশা তৈরির কাজ।
উল্লেখ্য, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীও পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিচয়পত্রের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, “যদি পরিচয়পত্রে লেখা থাকে কোন জেলার, কোন ব্লকের, কোন থানার বাসিন্দা, তাহলে শ্রমিকরা যে কোনো হেনস্থার মুখে পড়বেন না।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের ২২ লক্ষ মানুষ রাজ্যের বাইরে কাজ করেন। তিনি বলেন, “যেমন আমাদের ২২ লক্ষ মানুষ বাইরে কাজ করেন, তেমন বাইরের রাজ্যেরও দেড় কোটি মানুষ এই রাজ্যে কাজ করেন।” তাই পরিচয় পত্র প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে উঠবে বলে মনে করছেন তিনি। যদিও বাংলায় অন্য রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা করা হয় না বলে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পরিচয়পত্রের উদ্যোগকে শুধুমাত্র প্রশাসনিক নিরাপত্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃণমূল দল জনসমর্থনেরও হিসাব করছে। বাংলা ভাষাভাষী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে দিয়ে বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে হেনস্থা ও পুশব্যাকের ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার (West Bengal Government) এই পদক্ষেপকে জরুরি বলে মনে করছে।
আরও পড়ুনঃ ‘২১ তারিখের মধ্যে কার্যকর হবে সাসপেনশন’, দিল্লিতে EC-র মুখোমুখি হয়ে জানালেন বাংলার মুখ্যসচিব
উল্লেখ্য, পরিচয়পত্র প্রদান রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি বড় নিরাপত্তা ও স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। একই সঙ্গে এটি রাজ্যের মানুষের অধিকার সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতিও বহন করবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে ‘কর্মসাথী’ পোর্টালের মাধ্যমে পরিচয়পত্র সহজলভ্য হওয়ায় শ্রমিকরা এবার থেকে নিজের পরিচয় প্রমাণ করতে পারবে, এবং যে কোনো হেনস্থার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে।