বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মহিলা সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বড় পদক্ষেপের পথে নবান্ন (Nabanna)। মহিলাদের রাতে ডিউটি অর্থাৎ নাইট শিফটে (Women Workers Night Shift) তাদের সুরক্ষায় গাইডলাইন আনতে চলেছে রাজ্য। সূত্রের খবর এই নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তরফে একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে রাতে মহিলাদের ডিউটি বাধ্যতামূলক নয়।
মহিলা কর্মীদের সুরক্ষায় বড় পদক্ষেপের পথে নবান্ন | Nabanna
খসড়ায় স্পষ্ট করা হয়েছে, যেহেতু রাতে মহিলাদের জন্য ডিউটি করা বাধ্যতামূলক নয়, সেক্ষেত্রে যারা করতে চান, তাঁদের লিখিত অনুমতি নিতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। এখানে উল্লেখ্য, গত বছর আর জি কর কাণ্ডের পর নাইট ডিউটিতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই গাইডলাইন আনার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতের তরফেও সেই নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা, কলসেন্টার, স্বাস্থ্য, পরিবহন সহ একাধিক দপ্তরে মহিলাদের এখনও নাইট শিফটে কাজ করতে হয়। রাতে কাজের ক্ষেত্রে তাদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে নয়া গাইডলাইন আনার পথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই সংক্রান্ত খসড়ার বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তর, যেখানে মহিলাদের রাতে কাজের ক্ষেত্রে যুক্ত, তাদের থেকেও কিছু বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা সুরক্ষায় এই খসড়া প্রস্তাবে মোট ২২টি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রথমত বলা হয়েছে, নাইট ডিউটির ক্ষেত্রে রাতে অফিসে যাতায়াতের পথে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই। রাতে সংস্থার যে গাড়িতে ওই মহিলা কর্মীরা যাতায়াত করবেন, তা থাকবে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের আওতায়। পাশাপাশি সেই গাড়িতে রাখতে হবে প্রশিক্ষিত মহিলা নিরাপত্তারক্ষী। গাড়িতে বাধ্যতামূলক রাখতে হবে এমার্জেন্সি অ্যালার্টও।
খসড়ায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, নাইট শিফট হবে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত। যার মধ্যে নূন্যতম ১০ জন মহিলা বা টোটাল শিফটের তিনভাগের একভাগ মহিলাকে একসঙ্গে রাখতে হবে কাজে। এছাড়াও আরও একাধিক বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে খসড়ায়।
নবান্নের খসড়ায় বলা হয়েছে, মহিলা কর্মীদের বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা, ক্যান্টিনের ব্যবস্থা রাখতে হবে সংস্থায়। অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবস্থাও রাখতে হবে। অফিসে ঢোকার এন্ট্রি-এক্সিট পথে এবং করিডরে নজর রাখবে সিসিটিভি। অফিসে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ নেওয়ার জন্য রাখতে হবে কমিটিও। ওয়ার্কপ্লেস সেফটি অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য জরুরি নম্বর অফিসে সকলের চোখে পড়ে এমন জায়গায় ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। স্থানীয় ভাষায় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার সবাইকে বোঝাতে হবে।
সূত্রের খবর, বলা হয়েছে যে সমস্ত সংস্থায় এই মহিলা কর্মীরা নাইট শিফটে কাজ করবেন, তাঁদেকে কড়া নজরদারির আওতায় রাখা হবে। প্রত্যেক সংস্থায় ইন্টারনাল সেফটি রিভিউ কমিটির সদস্যরা তিন মাস অন্তর বৈঠকে বসবেন, সমস্ত বিষয় পর্যালোচনার জন্য। এই সমস্ত নির্দেশ সঠিকভাবে না মানলে সংস্থাকে শ্রম আইন মোতাবেক জরিমানা এমনকি সংস্থার ছাড়পত্রও বাতিল হতে পারে।