বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতার ফ্ল্যাট, জমি বা বাড়ি ক্রেতাদের জন্য বড় স্বস্তির খবর দিল রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করেই প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সার্কল রেট বাড়ানো হয়েছিল। এর ফলে বাড়ি বা জমি কেনাবেচার সময় ক্রেতাদের উপর বাড়তি স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফির বোঝা চাপছিল। দীর্ঘদিন ধরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির আপত্তি জানানোর পর অবশেষে রাজ্য সরকার সার্কল রেটে আংশিক সংশোধন আনল।
সার্কেল রেট কি?
সার্কল রেট হল সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্য। এর ভিত্তিতেই স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি ধার্য হয়। হঠাৎ করে এই হার বাজারদরের তুলনায় অনেকটা বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের বাস্তব মূল্যের থেকেও বেশি খরচ বহন করতে হচ্ছিল। প্রোমোটার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির একাধিকবার অনুরোধের পর এবার ছাড় দিল রাজ্য (West Bengal Government)।
কোথায় কত শতাংশ কমেছে সার্কেল রেট?
বনহুগলি (বিটি রোড) এলাকায় আগে সার্কল রেট ৮৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। এখন তা সংশোধন করে ৫৩ শতাংশে নামানো হয়েছে। সল্টলেক সংলগ্ন মহিষবাথানে ৮৭ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫৪ শতাংশ। দক্ষিণ বাইপাস এলাকায় ৮৩ শতাংশ থেকে তা নামিয়ে করা হয়েছে ৫২ শতাংশ। বেহালা সরশুনা এবং নিউ টাউনে নতুন করে সার্কল রেট তৈরি করা হবে। তবে টালিগঞ্জের সিরিটি, মহাবীরতলা ও বিএল সাহা রোডে এখনও কোনও পরিবর্তন আসেনি।
অর্থ দপ্তর সূত্রে খবর, মহিষবাথানে সবচেয়ে বেশি কমানো হয়েছে। প্রতি বর্গফুটে ৩,৪৬৩ টাকা। তপসিয়ায় ২,৮১৪ টাকা, বনহুগলিতে ২,৪৭৫ টাকা এবং বেহালা সরশুনায় ২,০০১ টাকা কমানো হয়েছে। ফলে ক্রেতাদের সরাসরি সাশ্রয় হবে। দক্ষিণ কলকাতার এক প্রোমোটিং সংস্থার কর্ণধার বলেন, “সার্কল রেট যদি বাজারদরের কাছাকাছি থাকে, তবে সবার জন্য সুবিধা। জমির দামের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় সরকারি রেট বাজারদরের চেয়েও অনেক বেশি নির্ধারিত হচ্ছিল। সে বিষয়েও আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।”
রিয়েল এস্টেট সংগঠনগুলির দাবি, এই সংশোধন মধ্যবিত্ত গৃহক্রেতাদের জন্য বড় স্বস্তি এনেছে। যারা গৃহঋণের পাশাপাশি বাড়তি স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশনের খরচে বিপদে পড়ছিলেন, তাঁদের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকরী সাহায্য।
আরও পড়ুনঃ সবটাই কি নির্বাচনী কৌশল? দুর্গাপুজোয় ইউনেস্কো স্বীকৃতির কৃতিত্ব নিয়ে মোদীর দাবি খারিজ তৃণমূলের
রাজ্য সরকারের (West Bengal Government) বক্তব্য
অর্থ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, “হঠাৎ করে বাড়তি স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশনের খরচ নিয়ে নানা মহল থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ এসেছিল। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলাম। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে।” অর্থ দপ্তরেরই একাংশের ধারণা, সার্কল রেটে ছাড় ঘোষণার পরেও সরকারের (West Bengal Government) রাজস্ব আদায় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এর ফলে রাজ্য যেমন লাভবান হবে, তেমনই গৃহক্রেতারাও কিছুটা স্বস্তি পাবেন।