বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা, ভয় দেখানো এবং পুলিশি হয়রানির ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। অসম, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, রাজস্থান থেকে শুরু করে ওড়িশা, সর্বত্রই বাংলার শ্রমিকদের ভাষাগত পরিচয়ের জন্য বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতেই সোমবার থেকে চালু হল রাজ্যের নতুন ‘শ্রমশ্রী পোর্টাল’ (Shramshree Prakalpa)।
কুড়ি হাজারের বেশি শ্রমিক আবেদন করেছেন শ্রমশ্রী প্রকল্পে (Shramshree Prakalpa)
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে চালু হচ্ছে শ্রমশ্রী প্রকল্পের (Shramshree Prakalpa) অনলাইন পোর্টাল। গত ২১ অগস্ট থেকেই অফলাইনে আবেদন জমা নেওয়া শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ২০ হাজারের বেশি শ্রমিক আবেদন করেছেন। এবার থেকে অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া ও সেই আবেদনের অগ্রগতি জানা আরও সহজ হবে। যাঁরা অফলাইনে আবেদন করেছেন, তাঁদের তথ্য ধাপে ধাপে আপলোড করা হবে।
শ্রমশ্রী প্রকল্পে (Shramshree Prakalpa) নাম নথিভুক্ত হলে যেসব পরিযায়ী শ্রমিক কাজ পাচ্ছেন না, তাঁদের আগামী এক বছর প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যসুরক্ষা, বিমা, শিক্ষা, পরিচয়পত্র এবং কল্যাণমূলক বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে শ্রমিকরা দ্রুত নথিপত্র-সহ পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।
শ্রমমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকদের উপর ভয়ঙ্কর নির্যাতন চলছে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে বা কর্মস্থল থেকে জোর করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। রাজ্যের দাবি, এর জেরেই হাজার হাজার শ্রমিক ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই নির্যাতনের প্রেক্ষিতেই তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমশ্রী প্রকল্প (Shramshree Prakalpa) চালু করে সরাসরি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে বার্তা দিল।
আরও পড়ুনঃ ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর ‘অত্যাচার’, বিধানসভায় বিশেষ প্রস্তাব নিয়ে ২ দিন ধরে আলোচনা
সব মিলিয়ে, শ্রমশ্রী পোর্টাল (Shramshree Prakalpa) চালুর মধ্যে দিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। আর্থিক নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক বার্তাও পৌঁছে গেল। আগামী দিনে লক্ষাধিক শ্রমিক এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন বলে আশা করছে রাজ্য শ্রম দপ্তর।