বাংলা হান্ট ডেস্ক : অভাব ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। বাবা সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন। কোনরকমে দুবেলা দুমুঠো ভাত জুটে যেত। এরকম পরিস্থিতিতেও ছেলের চোখে ছিল দেশের কৃতী বিজ্ঞানী (Scientist) হওয়ার স্বপ্ন। তার জেদ আর অধ্যবসায় সাফল্যের পথে আশা সব বাধাকে অতিক্রম করতে সাহায্য করে। এবং অবশেষে সাফল্যকে ছুঁয়ে দেখলেন বালুরঘাটের কৌস্তভ ঘোষ (Kaustubh Ghosh)।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের কৌস্তভ ঘোষ আজ দেশের অন্যতম সেরা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী (নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট) হওয়ার পথে। তিনি ভাবা পারমাণবিক গবেষণা সংস্থার (Bhabha Atomic Research Centre) লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে খবর। চলতি মাসেই তিনি পাড়ি দেবেন দক্ষিণ ভারতের ইন্দিরা গান্ধী রিসার্চ সেন্টারে তিনি জুনিয়র নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট পদে।
জানিয়ে রাখি, উত্তরবঙ্গ থেকে সম্ভবত কৌস্তভই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। জানা যাচ্ছে, তিনি নিউক্লয়ার ফুয়েল সাইকেলের উপর কাজ করবেন। টানা এক বছর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরেই তাকে সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেবে বার্ক।
কৌস্তভের স্কুলজীবনের কথা বললে, সাল ২০১৬ তে বালুরঘাট হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছেন কৌস্তভ। এরপর ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করার পর তিনি ভর্তী হন বিশ্বভারতীতে। এরপর ২০২১ সালে ভর্তি হন গুয়াহাটি আইআইটিতে। সেখান থেকেই শুরু করেন প্রস্ততি। এরপর ভাবা পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে নিয়োগের পরীক্ষায় বসেন।
জানা যাচ্ছে ছোট থেকেই ডঃ এপিজে আব্দুল কালামকে নিজের আইডল মানতেন তিনি। তাঁর মতোই কৌস্তভের লড়াইটাও সহজ ছিলনা। বাবা অসিত ঘোষ শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি সংস্থায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। মা রুমু ঘোষ ঘর সামলান। বাবার অল্প আয়ের উপর ভরসা করেই চলত সংসার। এমন পরিস্থিতিতে তার এই সাফল্যে গর্বিত তার বাবা-মাও। এই বিষয়ে কৌস্তভের মা বলেন, ‘অনেক পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। যতটা পেরেছি ওর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। খুব কষ্টে চলতে হয়েছে আমাদের। আজ খুশি লাগছে।’