বাংলাহান্ট ডেস্ক : কোভিড পরবর্তী সময়ে ব্যাংক ঋণের চাহিদা যথেষ্ট পরিমাণ কমেছে। কিন্তু একই সাথে দেশে ক্ষুদ্রঋণ এর চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশ জুড়ে ক্ষুদ্র ঋণের চাহিদা তুঙ্গে। ক্ষুদ্র ঋণ নেওয়ার তালিকায় সবথেকে প্রথমে আছে পশ্চিমবঙ্গ। সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, আমাদের দেশে বহু গ্রামগঞ্জে এখনো ব্যাঙ্কের পরিষেবা ঠিকমতো পাওয়া যায় না। আবার যেখানে ব্যাংক আছে সেই সব জায়গায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে অনেক রকম শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বহু মানুষই সহজলভ্য ক্ষুদ্রঋণের দিকে ঝুঁকছেন।
গতবছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সারা দেশের সাথে সাথে গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতিকেও দুর্বল করে দিয়েছে। অনেকেই চাইছেন এই পরিস্থিতিতে সামান্য কিছু পুঁজি নিয়ে নিজস্ব কর্মক্ষেত্র তৈরী করতে। আর সেই কারণেই ক্ষুদ্রঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলো আশার আলো দেখতে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যেই, ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলির সংগঠন মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশন নেটওয়ার্কের (এমফিন) তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মাথাপিছু গড় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৭০৮ টাকা। যেটি সারাদেশের মধ্যে সর্বাধিক। অন্যদিকে মাথাপিছু ৪৬ হাজার ৭৪ টাকা গড় ঋণ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে কেরল।
ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা ভিএফএস ক্যাপিটালের এমডি-সিইও কূলদীপ মাইতি জানান, করোনার সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ার পর গ্রামাঞ্চলের মানুষ নতুন জীবিকার সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছেন। কিন্তু, দেশের অধিকাংশ জায়গাতেই ব্যাংক পরিষেবা অমিল। যেসব জায়গায় ব্যাংক আছে সেই সব জায়গা থেকে ঋণ নিতে গেলে দেওয়া হচ্ছে হাজারো রকম শর্ত, যা অনেকের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব না। এর ফলে তারা ছোট অঙ্কের ঋণ নেওয়ার জন্য ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থা গুলির উপর ভরসা করছেন। এর ফলে বাড়ছে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ।
দেশের অর্থনীতিবিদদের একাংশের অভিযোগ, ভারতে বেকারত্বের হার চরম আকার ধারণ করেছে। চাকরি পাওয়া দুষ্কর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নড়বড় করে দিয়েছে গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতিকে। তাই নতুন ভাবে জীবিকার কাজ করছেন অনেকেই। অনেকে স্বল্প পুঁজি নিয়ে নতুন কোনো ব্যবসা তৈরি করতে চাইছেন আবার অনেকে পুরনো ব্যবসাতেই নতুন প্রাণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। চলতি অর্থবর্ষে এক ঋণ প্রদানকারী সংস্থা ঋণবিলি ২০০% বাড়িয়ে ২০০০ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখছেন বলেও জানা গিয়েছে।