নির্যাতনের ছায়া থেকে নির্বাচনের আলো! এবার কি ভোটময়দানে অভয়া-তামান্নার মা? বাড়ছে রাজনৈতিক জল্পনা

Published on:

Published on:

West Bengal Vote Challenge Shakes Political Landscape Ahead of Election

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) রাজনীতিতে ভোটের আগে উত্তেজনা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। অভয়ার ধর্ষণ ও খুনের মামলা থেকে শুরু করে ছোট্ট তামান্নার অকাল মৃত্যু, এই দুই ট্র্যাজেডি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ভীত একেবারে প্রায় নাড়িয়ে দিয়েছে। গত ৯ আগস্ট শনিবার অভয়ার ধর্ষণ ও খুনের বিচারের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন অভয়ার বাবা-মা। সেই অভিযানে দেখা যায় তামান্নার মা-বাবাকেও। সেদিন রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুই মেয়ে হারা মায়ের আর্তনাদ যেন কাঁপিয়ে তুলেছিল কলকাতার রাজপথ। এরপরেই এই অভিযানে ঘটে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড।

চুপ করে মুখ্যমন্ত্রী, আর তাতেই বাড়ছে জল্পনা

এদিন অভিযান চলাকালীন সিঁথির মোড় পার করতেই পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি বাঁধে অভয়ার মা-বাবার। অভয়ার মায়ের অভিযোগ পুলিশ তাদের উপর হামলা চালায় এবং তার শাঁখা-পলা ভেঙে যায়। মাথায়ও আঘাত পান অভয়ার মা। এই ঘটনায় রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষেপে ওঠে জনতা। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এখনও কোন রকম প্রতিক্রিয়া জানায়নি, আর তাতেই জল্পনা আরও বাড়ছে। বিরোধীদের দাবি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হয়েছে সবকিছু।

অভয়ার ধর্ষণ ও খুন কাণ্ড এবং দুষ্কৃতীদের হাতে তামান্নার হত্যা এই সবকিছু নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) রাজনীতি এখন চরমে। একেবারে চুপ করে আছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে এবার নাকি বিনা প্রতিটি চিহ্নে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোট পয়েন্টে লড়বেন অভয়া এবং তামান্নার মা। এই খবর ছড়াতেই রাজ্যের রাজনৈতিক মঞ্চে বড় ধরণের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কি বদলে যাবে রাজ্যের রাজনীতির চিত্র?

এবার লড়াই রাজ্যের (West Bengal) ভোট ময়দানে?

প্রসঙ্গত, নবান্নের সামনে অভয়ার মা-বাবাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সময় পুলিশি হস্তক্ষেপ এবং আক্রমণের ঘটনা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অভয়ার পরিবার আর শুধু বিচার দাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এবার তারা ভোটের ময়দানে সরাসরি লড়াই করতে চাইছেন বলে জনমনে গুঞ্জন উঠেছে। অন্যদিকে, তামান্নার মায়ের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিনা প্রতীক চিহ্ন নিয়ে ভোটে লড়াই করার পরিকল্পনা করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। কার্গিল শহীদ বিতান অধিকারীর স্ত্রীও এই প্রতিবাদী জোটে যুক্ত হতে পারেন বলেও খবর রাজনৈতিক মহলে।

সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মমতা

এখন প্রশ্ন, এই সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ ও ভোটচ্যালেঞ্জ কি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন রাজনীতির ময়দানে মানুষ ন্যায় ও নিরাপত্তার প্রশ্নে এতটাই সংবেদনশীল, তখন এই ধরনের প্রতিরোধমূলক ভোটযুদ্ধ ভোটের ফলাফলে অনেকটাই টান ফেলতে পারে। বিরোধী দলগুলি যদি এই আন্দোলনের পেছনে একত্রিত হয়, বিশেষ করে যদি সিপিএম বা অন্যান্য রাজনৈতিক দল বিনা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী দেয়, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঁদুরে মেঘ দেখার সম্ভাবনা বাড়ছে।

রাজনৈতিক মহলে এখনই শোনা যাচ্ছে, অভয়ার মা-বাবা ও তামান্নার মায়ের এই ভোটযুদ্ধ শুধু ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নয়, বরং এক বৃহৎ গণআন্দোলনে রূপ নেবে। এটি আগামী বিধানসভা ভোটের জন্য একটি বড় বার্তা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল, যেখানে জনগণ নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একযোগে স্লোগান উচ্চারণ করবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবেন? নাকি এই জনগনের আবেগের সামনে হার মানতে হবে তাঁকে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) রাজনীতি আসন্ন নির্বাচনে নতুন এক মোড় নিতে চলেছে যেখানে নির্দিষ্ট দলীয় রাজনীতি থেকে বেরিয়ে জনআন্দোলন ভোটের মূল চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে এই নাটকীয় মোড় রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের অনেকটা প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। অভয়ার ও তামান্নার পরিবার, যাদের আর্তনাদ রাজ্যের মানুষকে স্পর্শ করেছে, তারা এবার ভোটের ময়দানে নতুন বিপ্লব শুরু শুরু করবেন কিনা এখন সেটাই দেখার। তবে রাজ্যের পরিস্থিতি ও জনগণের প্রতিক্রিয়া বলছে এই লড়াইয়ে আভা এবং তামান্নার মায়ের পাশে থাকতে পারেন আরও অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত মানুষ।

West Bengal Vote Challenge Shakes Political Landscape Ahead of Election

আরও পড়ুনঃ কুণাল ঘোষ, রাজ্য CBI-র সঙ্গে সেটেলমেন্ট করেছে? তিলোত্তমার বাবার অভিযোগের পাল্টা দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র

পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) ভোটমঞ্চ এখন প্রস্তুত এই নতুন যুদ্ধের জন্য। প্রশ্ন শুধু একটাই, বিধানসভায় আসা পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এই প্রতিবাদের আগুন নেভাতে সক্ষম হবেন? নাকি ২০২৬ সালের নির্বাচনে ক্ষমতার কেন্দ্রে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাবেন রাজ্যবাসী? এইসব প্রশ্নের উত্তর দেবে শুধু সময়।