ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ভাঙার চেষ্টায় কেউ কখনও সফল হবে না! স্পষ্ট বার্তা রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর

Published on:

Published on:

What did Sergey Lavrov say about India Russia friendship?

বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের (India-Russia) সুদীর্ঘ বন্ধুত্ব আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্বস্তি এবার প্রকট হয়ে উঠেছে। রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত যে তেল কিনে চলেছে, তা একেবারেই ভালোভাবে নিতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলস্বরূপ, ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক এক লাফে ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে স্পষ্ট বার্তা মিলেছে যে, রাশিয়ার উপর চাপ তৈরি করার কৌশল হিসেবে ভারতকেও নিশানায় নিতে চাইছে আমেরিকা। কিন্তু চাপের মুখে নতিস্বীকার করতে রাজি নয় ভারত। বরং দিল্লি স্পষ্ট জানিয়েছে, তাদের নীতি স্বাধীন এবং জাতীয় স্বার্থের জায়গা থেকে তারা সিদ্ধান্ত নেয়।

ভারত রাশিয়ার অটুট বন্ধুত্ব (India-Russia)

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ ভারতের এই দৃঢ় অবস্থানকে খোলাখুলি কুর্নিশ জানিয়েছেন। মস্কোয় সাংবাদিক বৈঠকে লাভরভ বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের (India-Russia) সম্পর্ক দীর্ঘ সময়ের এবং তা ক্রমাগত আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা এই সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তারা ব্যর্থ হবেই।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, আন্তর্জাতিক চাপে ভারত যে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবে না, তা রাশিয়া গভীরভাবে উপলব্ধি করছে এবং সেই বন্ধুত্বকেও মর্যাদা দিচ্ছে।

আরও পড়ুন:‘গোটা ওয়াকফ আইন স্থগিত রাখার কোন যুক্তি নেই’, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বড় স্বস্তি কেন্দ্রের

ভারত-রাশিয়ার (India-Russia) সম্পর্ক কেবল অর্থনৈতিক দিকেই সীমাবদ্ধ নয়, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কৌশলগত ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাও। চলতি মাসেই দুই দেশ যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে চলেছে। পাশাপাশি মহাকাশ গবেষণাতেও ভারতকে পাশে দাঁড় করিয়েছে রাশিয়া। রসকসমসে ভারতীয় মহাকাশচারীরা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যা ভবিষ্যতের গগনযান মিশনের প্রস্তুতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। প্রতিরক্ষা চুক্তি, প্রযুক্তি বিনিময় থেকে শুরু করে বাণিজ্য সম্পর্ক— সর্বত্রই ভারত-রাশিয়ার পারস্পরিক নির্ভরতা বহু দশকের। তাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোনও চাপই এই সম্পর্ককে দুর্বল করতে পারবে না বলেই মনে করছে দুই দেশ।

এদিকে ট্রাম্পের কৌশল স্পষ্ট— ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার উপর যতটা সম্ভব চাপ তৈরি করা। সেই কারণেই ভারতকে লক্ষ্যবস্তু করছেন তিনি। ট্রাম্প শুধু ভারত নয়, ন্যাটো ও জি-৭ সদস্য দেশগুলিকেও আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তারা ভারত ও চিনের উপর শুল্ক চাপ বাড়ায়। অর্থাৎ, রাশিয়ার সহযোগীদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে করে দিতে চাইছে আমেরিকা। কিন্তু ভারতের অবস্থান পরিষ্কার, তারা কোনও শক্তির কাছে মাথা নত করবে না এবং নিজেদের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বজায় রাখবে (India-Russia)।

What did Sergey Lavrov say about India Russia friendship?

আরও পড়ুন:পুজোর আগে ভয় ধরাচ্ছে আবহাওয়া! কবে পাকাপাকি বিদায় নেবে বর্ষা? দিনক্ষণ জানাল IMD

আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের এই অবস্থানকে অনেকে ‘স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি’র নিদর্শন হিসেবেই দেখছেন। আমেরিকার চাপ, পশ্চিমা দুনিয়ার কূটনৈতিক হুমকি বা শুল্কবৃদ্ধি— কোনও কিছুই ভারতকে রাশিয়ার (India-Russia) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করতে পারছে না। বরং দিল্লি প্রমাণ করছে, বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের অবস্থান কেবল ‘ব্যালান্সিং অ্যাক্ট’ নয়, বরং এক স্বতন্ত্র পথচলা। রাশিয়ার প্রকাশ্য সমর্থন ভারতের সেই অবস্থানকেই আরও শক্তিশালী করে দিল। বিশ্ব রাজনীতির এই টানাপোড়েনে ভারত যে দৃঢ়ভাবে নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক কূটনীতির মানচিত্রে তাদের শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন (India-Russia)।