বাংলা হান্ট ডেস্ক: গতবছরেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রীতিমতো গর্জে ওঠে গোটা দেশ। সেই ঘটনার এক বছরের মধ্যেই কসবার (Kasba) সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের এক ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হলেন। ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে এই বর্বরোচিত ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন নির্যাতিতা তরুণী। যেখানে তিনি বলেন গত ২৫ জুন অর্থাৎ বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে ৭ টা থেকে রাত পৌনে ১১ টার মধ্যে ওই ঘটনা ঘটে।
নিজের কলেজেই (Kasba) ধর্ষণের শিকার তরুণী:
নির্যাতিতা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানিয়েছেন ওই দিন তিনি দুপুর ১২ টা ৫ নাগাদ পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের জন্য কলেজে (Kasba) পৌঁছেছিলেন। ওই তরুণী দাবি করেছেন, ঘটনার দিন মূল অভিযুক্ত প্রথমে তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। যদিও, ওই তরুণী তা প্রত্যাখ্যান করেন। তারপরেই ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ইউনিয়ন রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় হকি স্টিক দিয়ে তাঁকে মারধর করা হবে বলে ভয় দেখানো হয় এবং গায়ে হাত তোলাও হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় ওই তরুণী রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিযোগ, এরপর তাঁকে সংশ্লিষ্ট কলেজের (Kasba) গার্ড রুমে রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হলে ওই তরুণী বাধা দিতে থাকেন। সেই সময়ে মূল অভিযুক্ত ওই তরুণীর প্রেমিককে খুন করে দেওয়ার এবং নির্যাতিতার বাবা-মাকে গ্রেফতার করার হুমকি দিতে থাকে। তারপরেই ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় এবং মূল অভিযুক্তের দুই সঙ্গী সেখানে উপস্থিত থাকে।
আরও পড়ুন: ওভার নয়, এবার বল অনুযায়ী….T20 ক্রিকেটের নিয়মে বড় বদল করল ICC, কবে থেকে হবে লাগু?
এদিকে, তাঁকে নির্যাতনের প্রতিটি মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দিও করা হয়। ওই ঘটনার পর মূল অভিযুক্ত নির্যাতিতা তরুণীকে ভয় দেখিয়েছিল যে, তিনি যদি পুলিশের কাছে কিংবা বাইরে কারও কাছে এই ঘটনাটি সম্পর্কে জানিয়ে দেন সেক্ষেত্রে নির্যাতনের ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হবে ৷ পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রথমে সামগ্রিক বিষয়ে ভয় পেয়ে যান ওই তরুণী। তারপরেই সাহস অবলম্বনের মাধ্যমে তিনি তাঁর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জানান। এমতাবস্থায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টে নাগাদ ওই তরুণী সপরিবারে কসবা থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ৮৬ কোটি টাকায় হল “ডিল”, এবার এই কোম্পানি কিনে ফেললেন আদানি
শুরু হয়েছে তদন্ত: তরুণীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ৩ অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। অভিযোগপত্রে কারোর নাম লেখা ছিল না। পরিবর্তে সেখানে অভিযুক্তদের “এম”, “জে” ও “পি” নামে চিহ্নিত করা হয়। এদিকে, মূল অভিযুক্তের শাসকদলের সাথে যুক্ত থাকার বিষয়েও একাধিক ছবি সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত ২০২১-২২ সালে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দক্ষিণ কলকাতার জেনারেল সেক্রেটারি ছিল। পাশাপাশি, সে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দক্ষিণ কলকাতার ইউনিট প্রেসিডেন্ট ছিল বলেও জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য যে, মূল অভিযুক্ত ওই কলেজের (Kasba) প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে অস্থায়ী কর্মী হিসেবেও নিযুক্ত ছিল।